পর্দা: নারীদের মুখ ঢাকা কি পর্দার অংশ? নারীর মুখমণ্ডল খোলা রাখা প্রসঙ্গে আল-কুরআনের গভীর অনুধাবন
নারীদের মুখ ঢাকা কি পর্দার অংশ? -আল-কুরআন কী বলে?
নারীর মুখমণ্ডল খোলা রাখা প্রসঙ্গে আল-কুরআনের গভীর অনুধাবন-
মারিয়াম (সা.আ.): বিশ্বনারীদের রোল মডেল এবং তাঁর পরিচিতি
আল-কুরআন অনুধাবনে পোশাকের বিধান (Dress Code) ও এর আসল উদ্দেশ্য
ইহুদী-খৃষ্টান-মুসলিম নারীদের পোশাকের ধরন
এ বিষয়ে আল-কুরআনে থাকা আয়াতগুলোর ব্যাখ্যায় ভিন্নতার সুযোগ রয়েছে, কারণ কুরআন সুস্পষ্টভাবে "মুখ ঢাকার" কথা বলেনি। তবে কি বলেছেন?
কুরআনের প্রাসঙ্গিক আয়াত:
"...ঈমানদার নারীদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে... এবং যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তাদের ওড়নার প্রান্ত দিয়ে তাদের বক্ষদেশকে ঢেকে রাখে..."
"হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রীদেরকে, কন্যাদেরকে ও মুমিনদের নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্ত্যক্ত করা হবে না..."
৩. নারীর পর্দার জন্য যতটুকু আল-কুরআন বলে?
দৃষ্টি সংযত রাখা: পুরুষ ও নারী উভয়ের জন্যই এটি প্রথম নির্দেশ। (সূরা আন-নূর: ৩০-৩১)লজ্জাস্থানের হেফাজত: নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্যই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। (সূরা আন-নূর: ৩০-৩১)সৌন্দর্য বা সাজসজ্জা গোপন রাখা: মাহরাম পুরুষ (বাবা, ভাই, ছেলে ইত্যাদি) ছাড়া অন্যদের সামনে সৌন্দর্য প্রকাশ না করা। তবে "যা সাধারণতঃ প্রকাশমান" তার অনুমতি আছে- (সূরা আন-নূর: ৩১)বক্ষদেশ আবৃত করা: মাথার পোশাক বা ওড়না (খিমার) দিয়ে গলা ও বুক ঢেকে রাখা। (সূরা আন-নূর: ৩১)গোপন সৌন্দর্য প্রকাশ করে এমন আচরণ না করা: এমনভাবে হাঁটাচলা না করা, যাতে পায়ের অলংকারের মতো গোপন সাজসজ্জা প্রকাশ পেয়ে যায়। (সূরা আন-নূর: ৩১)বাইরের পোশাক (জিলবাব) পরিধান: বাইরে যাওয়ার সময় এমন একটি বড় চাদর বা পোশাক পরা, যা পুরো শরীরকে আবৃত করে। এর উদ্দেশ্য হিসেবে বলা হয়েছে, এতে তাদের মুমিন হিসেবে চেনা যাবে এবং উত্ত্যক্তের শিকার হতে হবে না। (সূরা আল-আহযাব: ৫৯)
নারীর মুখমণ্ডল খোলা রাখা প্রসঙ্গে আল-কুরআনের গভীর অনুধাবন-
নারীর মুখমণ্ডল খোলা রাখা প্রসঙ্গে আল-কুরআনের গভীর অনুধাবন-
উল্লেখিত আয়াতগুলো থেকে যে মূলনীতিটি বেরিয়ে আসে তা হলো—পারস্পরিক পরিচিতি (Recognition) । এই মূলনীতির আলোকে পর্দার ধরন বিশ্লেষণ করলে একটি সুস্পষ্ট চিত্র ফুটে ওঠে।
১. পরিচিতি: একটি সামাজিক ও মানবিক মূলনীতি (সূরা হুজুরাত, আয়াত ১৩)
"হে মানবজাতি, আমি তোমাদেরকে একজন পুরুষ ও একজন নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা পরস্পরকে চিনতে পারো (لِتَعَارَفُوا) । নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে তোমাদের মধ্যে সেই সর্বাধিক সম্মানিত, যে সর্বাধিক আল্লাহভীরু।..." (৪৯:১৩)
বিশ্লেষণ ও অনুধাবন:
এই আয়াতে আল্লাহ মানবজাতিকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করার প্রধান উদ্দেশ্য হিসেবে "পারস্পরিক পরিচিতি" -কে উল্লেখ করেছেন।
"লিতা'আরাফু" (لِتَعَفُوا) একটি ব্যাপক অর্থবোধক শব্দ, যার মধ্যে রয়েছে একে অপরকে জানা, চেনা এবং পরিচিত হওয়া।
মানুষকে চেনার বা শনাক্ত করার সবচেয়ে প্রধান এবং স্বাভাবিক মাধ্যম হলো তার মুখমণ্ডল (চেহারা) । কণ্ঠস্বর, হাঁটার ভঙ্গি বা শারীরিক গঠন দিয়ে চেনা সম্ভব হলেও, মুখমণ্ডলই হচ্ছে পরিচয়ের মূল ভিত্তি।
যদি মুখমণ্ডল আবৃত থাকে, তবে এই "পারস্পরিক পরিচিতি"-র উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়। একজন ব্যক্তি অন্যজনকে না চিনলে সামাজিক সম্পর্ক, লেনদেন, সাক্ষ্য প্রদান এবং পারস্পরিক আস্থা তৈরি করা কঠিন হয়ে পড়ে।
সুতরাং, এই আয়াতটি একটি সাধারণ মানবিক নীতি স্থাপন করে যে, মানুষ হিসেবে আমাদের একে অপরকে চেনার সুযোগ থাকা উচিত, এবং চেহারা দেখাই এর প্রধান উপায়।
"হে মানবজাতি, আমি তোমাদেরকে একজন পুরুষ ও একজন নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা পরস্পরকে চিনতে পারো (لِتَعَارَفُوا) । নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে তোমাদের মধ্যে সেই সর্বাধিক সম্মানিত, যে সর্বাধিক আল্লাহভীরু।..." (৪৯:১৩)
এই আয়াতে আল্লাহ মানবজাতিকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করার প্রধান উদ্দেশ্য হিসেবে "পারস্পরিক পরিচিতি" -কে উল্লেখ করেছেন।"লিতা'আরাফু" (لِتَعَفُوا) একটি ব্যাপক অর্থবোধক শব্দ, যার মধ্যে রয়েছে একে অপরকে জানা, চেনা এবং পরিচিত হওয়া। মানুষকে চেনার বা শনাক্ত করার সবচেয়ে প্রধান এবং স্বাভাবিক মাধ্যম হলো তার মুখমণ্ডল (চেহারা) । কণ্ঠস্বর, হাঁটার ভঙ্গি বা শারীরিক গঠন দিয়ে চেনা সম্ভব হলেও, মুখমণ্ডলই হচ্ছে পরিচয়ের মূল ভিত্তি।যদি মুখমণ্ডল আবৃত থাকে, তবে এই "পারস্পরিক পরিচিতি"-র উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়। একজন ব্যক্তি অন্যজনকে না চিনলে সামাজিক সম্পর্ক, লেনদেন, সাক্ষ্য প্রদান এবং পারস্পরিক আস্থা তৈরি করা কঠিন হয়ে পড়ে। সুতরাং, এই আয়াতটি একটি সাধারণ মানবিক নীতি স্থাপন করে যে, মানুষ হিসেবে আমাদের একে অপরকে চেনার সুযোগ থাকা উচিত, এবং চেহারা দেখাই এর প্রধান উপায়।
২. মুমিন নারীদের পরিচিতি: নিরাপত্তা ও সম্মানের প্রতীক (সূরা আল-আহযাব, আয়াত ৫৯)
"হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রীদেরকে, কন্যাদেরকে ও মুমিনদের নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে (أَدْنَىٰ أَن يُعْرَفْنَ) । ফলে তাদেরকে উত্ত্যক্ত করা হবে না..." (৩৩:৫৯)
বিশ্লেষণ ও অনুধাবন:
এই আয়াতে মুমিন নারীদের একটি বিশেষ পোশাক পরতে বলা হয়েছে, যার উদ্দেশ্য হলো—"তাদেরকে চেনা সহজ হবে" ।
এখানে প্রশ্ন আসে, কিসের ভিত্তিতে চেনা? আয়াতটি বলছে, এই চেনা যাওয়ার ফল হলো—"তাদেরকে উত্ত্যক্ত করা হবে না।" এর মানে হলো, তাদের পোশাক ও আচরণ দেখে একজন দর্শক বুঝতে পারবে যে, ইনি একজন সম্ভ্রান্ত, স্বাধীন ও মুমিন নারী, কোনো দাসী বা অশালীন নারী নন। এটি হলো সামষ্টিক পরিচিতি (Collective Identity) ।
একইসাথে, "চেনা সহজ হওয়া"র মধ্যে ব্যক্তিগত পরিচিতি (Individual Identity) -ও অন্তর্ভুক্ত। যদি একজন নারীকে তার মুখমণ্ডল দেখে চেনা যায়, তবে সমাজে তার একটি নির্দিষ্ট পরিচিতি গড়ে ওঠে। মানুষ তাকে তার নাম, পরিবার ও সম্মান দ্বারা চেনে। এই পরিচিতি তাকে উত্যক্তকারীদের হাত থেকে রক্ষা করে, কারণ অপরাধী জানে যে এই নারীকে উত্যক্ত করলে তাকে সহজেই শনাক্ত করা যাবে এবং এর পরিণতি ভোগ করতে হবে।
বিপরীতে, একজন সম্পূর্ণ মুখ ঢাকা নারী একজন অপরিচিত (Anonymous) সত্তা। তাকে উত্যক্ত করা সহজতর হতে পারে, কারণ তার পরিচয় গোপন থাকে এবং অপরাধীরও পরিচয় গোপন রাখা সহজ হয়।
সুতরাং, ৪৯:১৩ আয়াতের "পারস্পরিক পরিচিতি"-র নীতির সাথে ৩৩:৫৯ আয়াতের "চেনা সহজ হওয়া"-র নির্দেশনাটি সামঞ্জস্যপূর্ণ। উভয় ক্ষেত্রেই পরিচিতি একটি ইতিবাচক ও আবশ্যকীয় বিষয় হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছে, এবং মুখমণ্ডল খোলা রাখা এই পরিচিতির জন্য অপরিহার্য।
"হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রীদেরকে, কন্যাদেরকে ও মুমিনদের নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে (أَدْنَىٰ أَن يُعْرَفْنَ) । ফলে তাদেরকে উত্ত্যক্ত করা হবে না..." (৩৩:৫৯)
এই আয়াতে মুমিন নারীদের একটি বিশেষ পোশাক পরতে বলা হয়েছে, যার উদ্দেশ্য হলো— "তাদেরকে চেনা সহজ হবে" ।এখানে প্রশ্ন আসে, কিসের ভিত্তিতে চেনা? আয়াতটি বলছে, এই চেনা যাওয়ার ফল হলো—"তাদেরকে উত্ত্যক্ত করা হবে না।" এর মানে হলো, তাদের পোশাক ও আচরণ দেখে একজন দর্শক বুঝতে পারবে যে, ইনি একজন সম্ভ্রান্ত, স্বাধীন ও মুমিন নারী, কোনো দাসী বা অশালীন নারী নন। এটি হলো সামষ্টিক পরিচিতি (Collective Identity) ।একইসাথে, "চেনা সহজ হওয়া"র মধ্যে ব্যক্তিগত পরিচিতি (Individual Identity) -ও অন্তর্ভুক্ত। যদি একজন নারীকে তার মুখমণ্ডল দেখে চেনা যায়, তবে সমাজে তার একটি নির্দিষ্ট পরিচিতি গড়ে ওঠে। মানুষ তাকে তার নাম, পরিবার ও সম্মান দ্বারা চেনে। এই পরিচিতি তাকে উত্যক্তকারীদের হাত থেকে রক্ষা করে, কারণ অপরাধী জানে যে এই নারীকে উত্যক্ত করলে তাকে সহজেই শনাক্ত করা যাবে এবং এর পরিণতি ভোগ করতে হবে।বিপরীতে, একজন সম্পূর্ণ মুখ ঢাকা নারী একজন অপরিচিত (Anonymous) সত্তা। তাকে উত্যক্ত করা সহজতর হতে পারে, কারণ তার পরিচয় গোপন থাকে এবং অপরাধীরও পরিচয় গোপন রাখা সহজ হয়।সুতরাং, ৪৯:১৩ আয়াতের "পারস্পরিক পরিচিতি"-র নীতির সাথে ৩৩:৫৯ আয়াতের "চেনা সহজ হওয়া"-র নির্দেশনাটি সামঞ্জস্যপূর্ণ। উভয় ক্ষেত্রেই পরিচিতি একটি ইতিবাচক ও আবশ্যকীয় বিষয় হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছে, এবং মুখমণ্ডল খোলা রাখা এই পরিচিতির জন্য অপরিহার্য।
৩. মারিয়াম (সা.আ.): বিশ্বনারীদের রোল মডেল এবং তাঁর পরিচিতি (সূরা আলে ইমরান ও মারিয়াম)
ক. রোল মডেল হিসেবে ঘোষণা:
"আর স্মরণ কর, যখন ফেরেশতারা বলেছিল, ‘হে মারিয়াম, নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাকে মনোনীত করেছেন এবং তোমাকে পবিত্র করেছেন এবং বিশ্বের নারীদের ওপর তোমাকে নির্বাচিত করেছেন ’।" (৩:৪২)
খ. পরিচিতি ও শনাক্তকরণের বাস্তব উদাহরণ:
"অতঃপর সে তাকে (ঈসাকে) কোলে নিয়ে তার সম্প্রদায়ের নিকট আসল। তারা বলল, ‘হে মারিয়াম , তুমি তো এক অদ্ভুত কাণ্ড করে বসেছ। হে হারূনের বোন , তোমার পিতা কোনো মন্দ লোক ছিল না এবং তোমার মাতাও কোনো ব্যভিচারিণী ছিল না’।" (১৯:২৭-২৮)
বিশ্লেষণ ও অনুধাবন:
মারিয়াম (আ.)-কে যখন বিশ্বনারীদের জন্য একজন রোল মডেল হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে, তখন তাঁর জীবন ও আচরণ আমাদের জন্য শিক্ষণীয়।
উপরোক্ত আয়াতে দেখা যায়, তিনি যখন শিশু ঈসা (আ.)-কে নিয়ে তাঁর সম্প্রদায়ের কাছে ফিরলেন, তখন সবাই তাঁকে দেখেই চিনতে পেরেছিল। তারা সরাসরি তাঁর নাম ধরে সম্বোধন করেছে—"হে মারিয়াম"।
শুধু নাম ধরেই নয়, তারা তাঁর পারিবারিক পরিচয়ও তুলে ধরেছে—"হে হারূনের বোন"। এটি প্রমাণ করে যে, তিনি তাদের কাছে একজন সুপরিচিত ব্যক্তি ছিলেন।
এই দৃশ্যটি তখনই সম্ভব, যদি মারিয়ামের মুখমণ্ডল অনাবৃত থাকে। যদি তাঁর মুখ ঢাকা থাকত, তাহলে লোকেরা তাঁকে এভাবে সরাসরি শনাক্ত করতে পারত না। বরং প্রশ্ন করত, "কে তুমি?" বা "তোমার পরিচয় কী?"
এছাড়াও, তাঁর কোলে থাকা শিশুটিকেও তারা দেখতে পাচ্ছিল, যা থেকে বোঝা যায় তাঁর পোশাক এমন ছিল যে, তিনি এবং তাঁর কোলের শিশু উভয়ই দৃশ্যমান ছিলেন।
"আর স্মরণ কর, যখন ফেরেশতারা বলেছিল, ‘হে মারিয়াম, নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাকে মনোনীত করেছেন এবং তোমাকে পবিত্র করেছেন এবং বিশ্বের নারীদের ওপর তোমাকে নির্বাচিত করেছেন ’।" (৩:৪২)
"অতঃপর সে তাকে (ঈসাকে) কোলে নিয়ে তার সম্প্রদায়ের নিকট আসল। তারা বলল, ‘ হে মারিয়াম , তুমি তো এক অদ্ভুত কাণ্ড করে বসেছ।হে হারূনের বোন , তোমার পিতা কোনো মন্দ লোক ছিল না এবং তোমার মাতাও কোনো ব্যভিচারিণী ছিল না’।" (১৯:২৭-২৮)
মারিয়াম (আ.)-কে যখন বিশ্বনারীদের জন্য একজন রোল মডেল হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে, তখন তাঁর জীবন ও আচরণ আমাদের জন্য শিক্ষণীয়। উপরোক্ত আয়াতে দেখা যায়, তিনি যখন শিশু ঈসা (আ.)-কে নিয়ে তাঁর সম্প্রদায়ের কাছে ফিরলেন, তখন সবাই তাঁকে দেখেই চিনতে পেরেছিল। তারা সরাসরি তাঁর নাম ধরে সম্বোধন করেছে—"হে মারিয়াম"। শুধু নাম ধরেই নয়, তারা তাঁর পারিবারিক পরিচয়ও তুলে ধরেছে—"হে হারূনের বোন"। এটি প্রমাণ করে যে, তিনি তাদের কাছে একজন সুপরিচিত ব্যক্তি ছিলেন। এই দৃশ্যটি তখনই সম্ভব, যদি মারিয়ামের মুখমণ্ডল অনাবৃত থাকে। যদি তাঁর মুখ ঢাকা থাকত, তাহলে লোকেরা তাঁকে এভাবে সরাসরি শনাক্ত করতে পারত না। বরং প্রশ্ন করত, "কে তুমি?" বা "তোমার পরিচয় কী?" এছাড়াও, তাঁর কোলে থাকা শিশুটিকেও তারা দেখতে পাচ্ছিল, যা থেকে বোঝা যায় তাঁর পোশাক এমন ছিল যে, তিনি এবং তাঁর কোলের শিশু উভয়ই দৃশ্যমান ছিলেন।
সমন্বিত সিদ্ধান্ত: আল-কুরআনের আলোকে "চিনতে পারার সিমটম"
আপনার উপস্থাপিত আয়াতগুলোর গভীর অনুধাবন থেকে নিম্নলিখিত সিদ্ধান্তে আসা যায়:
পরিচিতি একটি কুরআনি মূলনীতি: আল্লাহ মানুষকে চেনা-জানার জন্যই বিভিন্ন গোত্রে বিভক্ত করেছেন (৪৯:১৩)।
মুখমণ্ডল পরিচিতির প্রধান মাধ্যম: মানুষকে চেনার স্বাভাবিক এবং সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো তার চেহারা দেখা।
নারীর পরিচিতি নিরাপত্তার সহায়ক: মুমিন নারীদের এমনভাবে চলতে বলা হয়েছে যাতে তাদের "চেনা যায়" (৩৩:৫৯), যা তাদের সম্মান বৃদ্ধি করে এবং নিরাপত্তা দেয়। এই চেনা যাওয়া ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক উভয়ই হতে পারে, এবং মুখমণ্ডল খোলা রাখা এর জন্য আবশ্যক।
মারিয়াম (সা.আ.) -এর বাস্তব উদাহরণ: কুরআনে বর্ণিত একজন রোল মডেল (মারিয়াম) সমাজে মুখমণ্ডল অনাবৃত রেখেই বিচরণ করতেন, যার ফলে তাঁর সম্প্রদায় তাঁকে সহজেই চিনতে পেরেছিল।
অতএব, শুধুমাত্র আল-কুরআনের কাঠামোর আয়াত বিশ্লেষণ করলে এটি প্রতীয়মান হয় যে, নারীদের মুখমণ্ডল খোলা রাখা কেবল অনুমোদিতই নয়, বরং পারস্পরিক পরিচিতি ও সামাজিক নিরাপত্তার কুরআনি নীতির সাথে এটি অধিক সামঞ্জস্যপূর্ণ।
পরিচিতি একটি কুরআনি মূলনীতি: আল্লাহ মানুষকে চেনা-জানার জন্যই বিভিন্ন গোত্রে বিভক্ত করেছেন (৪৯:১৩)।মুখমণ্ডল পরিচিতির প্রধান মাধ্যম: মানুষকে চেনার স্বাভাবিক এবং সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো তার চেহারা দেখা।নারীর পরিচিতি নিরাপত্তার সহায়ক: মুমিন নারীদের এমনভাবে চলতে বলা হয়েছে যাতে তাদের "চেনা যায়" (৩৩:৫৯), যা তাদের সম্মান বৃদ্ধি করে এবং নিরাপত্তা দেয়। এই চেনা যাওয়া ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক উভয়ই হতে পারে, এবং মুখমণ্ডল খোলা রাখা এর জন্য আবশ্যক।মারিয়াম (সা.আ.) -এর বাস্তব উদাহরণ: কুরআনে বর্ণিত একজন রোল মডেল (মারিয়াম) সমাজে মুখমণ্ডল অনাবৃত রেখেই বিচরণ করতেন, যার ফলে তাঁর সম্প্রদায় তাঁকে সহজেই চিনতে পেরেছিল।
নারীরা কপালে টিপ দেওয়া সম্পর্কে আল-কুরআন কী বলে?
আল-কুরআনে "টিপ" পরা বা কপালে কোনো চিহ্ন দেওয়া সম্পর্কে সরাসরি কোনো আয়াত বা নিষেধাজ্ঞা নেই । "টিপ" শব্দটি বা এই সংক্রান্ত কোনো নির্দিষ্ট বিধান কুরআনে উল্লেখ করা হয়নি।
কুরআন নারীদের সাজসজ্জা বা "জিনাত" (زينَة) প্রকাশ করার বিষয়ে সাধারণ নির্দেশনা দিয়েছে। সূরা আন-নূরের ৩১ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, নারীরা যেন তাদের সৌন্দর্য বা সাজসজ্জা প্রকাশ না করে, তবে যা সাধারণভাবে প্রকাশ পায় তা ছাড়া।
"...তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে..." (সূরা আন-নূর, আয়াত: ৩১)
এখানে একটি টিপ "সাধারণভাবে প্রকাশমান" সৌন্দর্যের অংশ নাকি গোপনীয় সৌন্দর্যের অংশ, সে বিষয়ে কুরআন কোনো নির্দিষ্ট ব্যাখ্যা দেয়নি। সুতরাং, শুধুমাত্র কুরআনের পাঠ্য অনুযায়ী, টিপ পরার বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট হালাল বা হারাম বিধান নেই।
আল-কুরআন অনুধাবনে পোশাকের বিধান (Dress Code) ও এর আসল উদ্দেশ্য
আল-কুরআনে "টিপ" পরা বা কপালে কোনো চিহ্ন দেওয়া সম্পর্কে
"...তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে..." (সূরা আন-নূর, আয়াত: ৩১)
আল-কুরআন অনুধাবনে পোশাকের বিধান (Dress Code) ও এর আসল উদ্দেশ্য
আল-কুরআন পোশাককে কেবল একটি আবরণের বস্তু হিসেবে দেখে না, বরং এটিকে মানব অস্তিত্বের একটি গভীর আধ্যাত্মিক, সামাজিক এবং নৈতিক অনুষঙ্গ হিসেবে উপস্থাপন করে। কুরআনের আলোকে পোশাকের বিধান ও উদ্দেশ্যকে কয়েকটি স্তরে ভাগ করে বোঝা যায়।
প্রথম স্তর: পোশাকের মৌলিক ও সার্বজনীন উদ্দেশ্য
পোশাকের ধারণাটি মানব ইতিহাসের শুরু থেকেই বিদ্যমান। আদম ও হাওয়া (আ.)-এর ঘটনা বর্ণনার মাধ্যমে কুরআন পোশাকের সবচেয়ে মৌলিক উদ্দেশ্য তুলে ধরে।
আয়াত:
"হে বনী আদম, আমি তোমাদের জন্য পোশাক নাযিল করেছি, যা তোমাদের লজ্জাস্থান আবৃত করে এবং যা শোভাস্বরূপ। আর তাকওয়ার পোশাকই সর্বোত্তম। এটি আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অন্যতম, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।" (সূরা আল-আ'রাফ, আয়াত: ২৬)
এই একটি আয়াত থেকেই পোশাকের তিনটি মৌলিক উদ্দেশ্য স্পষ্ট হয়:
১. লজ্জা নিবারণ (لِيُوَارِيَ سَوْآتِكُمْ): পোশাকের প্রধান এবং প্রাথমিক কাজ হলো মানুষের সাও'আত বা লজ্জাস্থান (যা প্রকাশ পেলে মানুষ লজ্জিত হয়) আবৃত করা। এটি মানুষের সহজাত লজ্জা ও সভ্যতার পরিচায়ক।
২. শোভা ও সৌন্দর্য (وَرِيشًا): রিশান শব্দের অর্থ হলো সাজসজ্জা বা অলঙ্করণ। অর্থাৎ, পোশাক কেবল লজ্জা ঢাকার জন্যই নয়, এটি মানুষের সৌন্দর্য, মর্যাদা এবং ব্যক্তিত্ব প্রকাশেরও একটি মাধ্যম। ইসলাম সৌন্দর্য বা পরিপাটি থাকাকে উৎসাহিত করে।
৩. তাকওয়া বা আল্লাহ-সচেতনতার প্রতীক (وَلِبَاسُ التَّقْوَىٰ ذَٰلِكَ خَيْرٌ): এটিই পোশাকের আসল এবং সর্বোচ্চ উদ্দেশ্য । বাহ্যিক পোশাক মানুষের ভেতরের অবস্থার প্রতিফলন মাত্র। একজন ব্যক্তির পোশাক তার আল্লাহ-সচেতনতা, বিনয় এবং নৈতিক মূল্যবোধের প্রকাশ ঘটায়। যদি অন্তরে তাকওয়া না থাকে, তবে বাহ্যিক পোশাক শুধু একটি লোক-দেখানো আনুষ্ঠানিকতায় পরিণত হয়। তাই কুরআন বলছে, "তাকওয়ার পোশাকই সর্বোত্তম।"
"হে বনী আদম, আমি তোমাদের জন্য পোশাক নাযিল করেছি, যা তোমাদের লজ্জাস্থান আবৃত করে এবং যা শোভাস্বরূপ। আর তাকওয়ার পোশাকই সর্বোত্তম। এটি আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অন্যতম, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।" (সূরা আল-আ'রাফ, আয়াত: ২৬)
দ্বিতীয় স্তর: নারী ও পুরুষের জন্য নির্দিষ্ট বিধান ও তার সামাজিক উদ্দেশ্য:
কুরআন নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই শালীনতার সাধারণ নির্দেশনা দিয়েছে। এটি কেবল পোশাকের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং আচরণ ও দৃষ্টির সংযম দিয়ে শুরু হয়।
ক. সাধারণ নির্দেশনা (নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য):
"মুমিন পুরুষদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হেফাযত করে...।" (সূরা আন-নূর: ৩০)
"ঈমানদার নারীদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হেফাযত করে...।" (সূরা আন-নূর: ৩১)
পোশাকের বিধানের আগে কুরআন দৃষ্টি ও আচরণের পর্দার কথা বলেছে, যা থেকে বোঝা যায় মূল উদ্দেশ্য হলো একটি সুস্থ ও পবিত্র সমাজ গঠন করা।
খ. নারীদের পোশাকের বিধান ও তার উদ্দেশ্য:
১. সূরা আন-নূর, আয়াত ৩১:
"...তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য (زينَتَهُنَّ) প্রদর্শন না করে এবং তাদের ওড়না (خُمُرِهِنَّ) দ্বারা তাদের বক্ষদেশকে আবৃত করে রাখে...।"
উদ্দেশ্য: এখানে মূল উদ্দেশ্য হলো নারীর সৌন্দর্য ও আকর্ষণকে একটি ব্যক্তিগত এবং সুরক্ষিত গণ্ডির মধ্যে রাখা, যাতে তা সর্বসাধারণের ভোগের বস্তুতে পরিণত না হয়। জিনাত বা সৌন্দর্য প্রকাশ না করার নির্দেশনার মাধ্যমে নারীর মর্যাদা ও সম্মান রক্ষা করা হয়েছে। খিমার বা ওড়না দিয়ে বক্ষদেশ ঢাকার নির্দেশনা একটি নির্দিষ্ট শালীনতার মানদণ্ড নির্ধারণ করে দেয়।
২. সূরা আল-আহযাব, আয়াত ৫৯:
"হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রীদেরকে, কন্যাদেরকে ও মুমিনদের নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের (جَلَابِيبِهِنَّ) কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে (أَن يُعْرَفْنَ) । ফলে তাদেরকে উত্ত্যক্ত করা হবে না (فَلَا يُؤْذَيْنَ) ..."
এই আয়াতে পোশাকের দুটি সুনির্দিষ্ট সামাজিক উদ্দেশ্য উল্লেখ করা হয়েছে:
পরিচয় প্রতিষ্ঠা (Recognition): জিলবাব বা বহিরাবরণের উদ্দেশ্য হলো মুমিন, স্বাধীন ও সম্ভ্রান্ত নারীদের একটি স্বতন্ত্র পরিচিতি দান করা। তাদের পোশাকই বলে দেবে যে, তারা সাধারণ কোনো নারী নন, বরং সম্মানিত ও আত্মমর্যাদাশীল।
নিরাপত্তা ও সুরক্ষা (Protection): যখন তাদের এই স্বতন্ত্র পরিচয় প্রতিষ্ঠিত হবে, তখন সমাজে বখাটে বা মন্দ লোকেরা তাদেরকে উত্যক্ত করার সাহস পাবে না। পোশাক এখানে একটি সামাজিক রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে।
"মুমিন পুরুষদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হেফাযত করে...।" (সূরা আন-নূর: ৩০)
"ঈমানদার নারীদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হেফাযত করে...।" (সূরা আন-নূর: ৩১)
"...তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য (زينَتَهُنَّ) প্রদর্শন না করে এবং তাদেরওড়না (خُمُرِهِنَّ) দ্বারা তাদের বক্ষদেশকে আবৃত করে রাখে...।"
উদ্দেশ্য: এখানে মূল উদ্দেশ্য হলো নারীর সৌন্দর্য ও আকর্ষণকে একটি ব্যক্তিগত এবং সুরক্ষিত গণ্ডির মধ্যে রাখা, যাতে তা সর্বসাধারণের ভোগের বস্তুতে পরিণত না হয়। জিনাত বা সৌন্দর্য প্রকাশ না করার নির্দেশনার মাধ্যমে নারীর মর্যাদা ও সম্মান রক্ষা করা হয়েছে। খিমার বা ওড়না দিয়ে বক্ষদেশ ঢাকার নির্দেশনা একটি নির্দিষ্ট শালীনতার মানদণ্ড নির্ধারণ করে দেয়।
"হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রীদেরকে, কন্যাদেরকে ও মুমিনদের নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের (جَلَابِيبِهِنَّ) কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকেচেনা সহজ হবে (أَن يُعْرَفْنَ) । ফলে তাদেরকেউত্ত্যক্ত করা হবে না (فَلَا يُؤْذَيْنَ) ..."
পরিচয় প্রতিষ্ঠা (Recognition): জিলবাব বা বহিরাবরণের উদ্দেশ্য হলো মুমিন, স্বাধীন ও সম্ভ্রান্ত নারীদের একটি স্বতন্ত্র পরিচিতি দান করা। তাদের পোশাকই বলে দেবে যে, তারা সাধারণ কোনো নারী নন, বরং সম্মানিত ও আত্মমর্যাদাশীল।নিরাপত্তা ও সুরক্ষা (Protection): যখন তাদের এই স্বতন্ত্র পরিচয় প্রতিষ্ঠিত হবে, তখন সমাজে বখাটে বা মন্দ লোকেরা তাদেরকে উত্যক্ত করার সাহস পাবে না। পোশাক এখানে একটি সামাজিক রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে।
সারসংক্ষেপ: আল-কুরআনের আলোকে পোশাকের আসল উদ্দেশ্য:
শুধুমাত্র আল-কুরআন অনুধাবন করলে পোশাক বিধানের বহুস্তরীয় উদ্দেশ্য পাওয়া যায়:
আধ্যাত্মিক উদ্দেশ্য: তাকওয়া (আল্লাহ-সচেতনতা) অর্জন করা এবং বাহ্যি
ক আচরণের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ পবিত্রতার প্রতিফলন ঘটানো।নৈতিক উদ্দেশ্য: লজ্জা ও শালীনতা (হায়া) রক্ষা করা, যা মানুষের فِطْرَت বা সহজাত প্রকৃতির অংশ।
সামাজিক উদ্দেশ্য:
পরিচয় ও সম্মান: মুমিন হিসেবে স্বতন্ত্র পরিচিতি ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা।
নিরাপত্তা: যৌন হয়রানি ও অনাকাঙ্ক্ষিত দৃষ্টি থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা।
শৃঙ্খলা: সমাজে সুস্থ পরিবেশ বজায় রাখা এবং নারী-পুরুষের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করা।
ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য: শোভা ও মর্যাদা প্রকাশ করা এবং নিজেকে পরিপাটি ও সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা।
শুধু বাহ্যিক আবরণ যথেষ্ট নয়, যদি অন্তরে তাকওয়া ও সতীত্ব না থাকে। প্রকৃত তাকওয়া আচরণ, কথাবার্তা ও সামাজিক মিথস্ক্রিয়ায় প্রতিফলিত হয়। একজন মেধাবী ও সচেতন নারী, যার অন্তরে তাকওয়া রয়েছে, তিনি স্বতঃস্ফূর্তভাবে শালীনতা বজায় রাখার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
সুতরাং, কুরআনের দৃষ্টিতে পোশাক কেবল একটি কাপড় নয়, এটি একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থার প্রতীক, যা ব্যক্তির আত্মা, সমাজ ও নৈতিকতার সাথে গভীরভাবে জড়িত।
ইহুদী-খৃষ্টান-মুসলিম নারীদের পোশাকের ধরন
ক আচরণের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ পবিত্রতার প্রতিফলন ঘটানো।আধ্যাত্মিক উদ্দেশ্য: তাকওয়া (আল্লাহ-সচেতনতা) অর্জন করা এবং বাহ্যিনৈতিক উদ্দেশ্য: লজ্জা ও শালীনতা (হায়া) রক্ষা করা, যা মানুষের فِطْرَت বা সহজাত প্রকৃতির অংশ।সামাজিক উদ্দেশ্য: পরিচয় ও সম্মান: মুমিন হিসেবে স্বতন্ত্র পরিচিতি ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা।নিরাপত্তা: যৌন হয়রানি ও অনাকাঙ্ক্ষিত দৃষ্টি থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা।শৃঙ্খলা: সমাজে সুস্থ পরিবেশ বজায় রাখা এবং নারী-পুরুষের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করা।
ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য: শোভা ও মর্যাদা প্রকাশ করা এবং নিজেকে পরিপাটি ও সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা।
Leave a Comment