‘গোপন সৌন্দর্য’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? আল কুরআনে নারীদের মাথা ঢাকার বিষয়টি:
➡️আল কুরআনে নারীদের মাথা ঢাকার বিষয়টি উল্লখে আছে কি না?
➡️আল কুরআনে ‘গোপন সৌন্দর্য’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
-একজন আগ্রহী বোনের উপলব্ধি ও মানার ইচ্ছার কারণে এই আয়াতটি গভীরভাবে চিন্তা (তাদাব্বুর) করার একটি প্রয়াস।
প্রসঙ্গক্রমে আমরা একটু জেনে-বুঝে নিতে চাই যে,
📌 সাজসজ্জা, অলংকার, সুন্দর পোশাক পরা, রিযিকের মধ্যে উপযুক্ত বস্তুসমূহ (তয়্যিবাত) বনী আদম বিশেষ করে ঈমানদারদের জন্য বৈধ: দ্র: সূরা আল আরাফ ৭:৩১-৩২।
🔹 তবে
তা অহংকার, অপব্যয় বা অন্যের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য নয়।
সূরা আন-নূর ২৪:৩১ আয়াতে ‘গোপন সৌন্দর্য’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
প্রশ্নটি মূলত “গোপন সৌন্দর্য” (ما يُخْفِينَ مِن زِينَتِهِنَّ) বলতে কুরআন ঠিক কী বোঝাতে চেয়েছে—শুধু অলংকারের শব্দ, নাকি শরীরের অন্যান্য সৌন্দর্যও অন্তর্ভুক্ত? আসুন কুরআনের আয়াত বিশ্লেষণ করে বুঝে নিই।
মূল আয়াত যেখানে ‘গোপন সৌন্দর্য’ শব্দটি এসেছে:
📖 সূরা আন-নূর (২৪:৩১):
📖 “…আর তারা যেন তাদের পা এমনভাবে না ফেলে যাতে তাদের গোপন সৌন্দর্য প্রকাশ হয়ে যায়”
➡️ আহসানুল খালিকিন (সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টিকর্তা) নারীকে আকর্ষণীয় করে সৃষ্টি করেছেন, যা তাঁর মর্যাদা ও সৌন্দর্যের অংশ। তাঁকে বিশেষভাবে জোড়ারূপে সৃষ্টি করে শুধুমাত্র অলংকার নয়, বরং গলার অংশ, বুক, বাহু, পা ও শরীরের আকৃতিসহ তাঁর স্বাভাবিক সৌন্দর্যকে আরও নান্দনিক করেছেন, যা গোপন সৌন্দর্যের অন্তর্ভুক্ত।
➡️ এটি বোঝায় তাদের অলংকার, শরীরের আকৃতি, সাজসজ্জা, মেকআপ, গহনা ইত্যাদি, যা পর্দার মাধ্যমে লুকিয়ে রাখা উচিত।
নারীদের বুক ঢাকার নির্দেশনার আয়াত:
📖 সূরা আল-আহযাব (৩৩:৫৯):
তবে ৪:৩১ ধারা কার্যকর না করলে স্বদাবীকৃত মুসলিমা হওয়া যায় বটে কিন্তু রবের কাছে....?
🔹তাহলে, পা ফেলা ও বুক ঢাকার মধ্যে সম্পর্ক কী? পায়ের শব্দ ও সৌন্দর্যের সম্পর্ক:
📖 সূরা আন-নূর (২৪:৩১) (শেষাংশ):
কারণ, দ্রুত বা জোরে হাঁটার ফলে শরীরের সৌন্দর্য ও সাজসজ্জার কিছু অংশ প্রকাশ পাওয়ার আশঙ্কা থাকে, যা ইসলামে পর্দার মূল চেতনার পরিপন্থী।
➡️ যখন একজন নারী দ্রুত বা জোরে হাঁটেন, তখন তাঁর শরীরের কিছু অংশের নড়াচড়া স্পষ্ট হয়ে যেতে পারে। দৃষ্টিগোচর হতে পারে, যা পুরুষদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে।
➡️ বিশেষ করে যদি তিনি সঠিকভাবে পোশাক না পরেন, তবে হাঁটার সময় বুকের আকৃতি বা সাজসজ্জা প্রকাশ পেতে পারে।
🔹 এজন্য হয়তো (এখন পর্যন্ত আমার যা বুঝে আসে) কুরআনে বুক ঢাকার বিশেষ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে (২৪:৩১) এবং একই সঙ্গে পায়ের শব্দ না করার জন্যও বলা হয়েছে, যাতে সাজসজ্জা ও সৌন্দর্য গোপন থাকে।
🔹 আল কুরআনের উপরোক্ত আয়াতসমূহ তাদাব্বুর করলে এখন পর্যন্ত যা বোধে আসে-
📌 নিষ্কর্ষ/সার-সংক্ষেপ:
আল-কোরআনে নারীদের জন্য পর্দা সংক্রান্ত আয়াতগুলোতে মাথা ঢাকার বিষয়ে বিশেষভাবে উল্লেখ আছে কি না, তা গভীরভাবে আয়াত বিশ্লেষণের মাধ্যমে বোঝার চেষ্টা করা যেতে পারে। নিচে প্রধান আয়াতগুলো তুলে ধরা হলো:
১. সূরা আন-নূর (২৪:৩১)
"আর মুমিন নারীদের বলে দাও যে, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে অবনমিত করে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। তারা যেন যা সাধারণত প্রকাশমান তা ব্যতীত তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের ওড়না (خُمُرِهِنَّ, খিমার) দিয়ে বক্ষদেশ (جُيُوبِهِنَّ, জায়ুবিহিন্না) আবৃত করে রাখে।"
🔹এখানে "খিমার" (خُمُرِهِنَّ) শব্দটি এসেছে, যা আরবিতে এমন এক ধরনের কাপড় বোঝায় যা মাথা ঢেকে রাখার জন্য ব্যবহৃত হতো। তবে আয়াতে সরাসরি মাথা ঢাকার কথা বলা হয়নি; বরং বলা হয়েছে যে, ওড়না বা খিমার দিয়ে বক্ষদেশ ঢেকে রাখতে হবে।
২. সূরা আল-আহজাব (৩৩:৫৯)
"হে নবী! আপনার স্ত্রীগণ, কন্যাগণ এবং মুমিন নারীদের বলুন, তারা যেন নিজেদের ওপর তাদের ‘জিলবাব’ (جَلَابِيبِهِنَّ) টেনে নেয়। এতে তারা সহজেই চিহ্নিত হবে এবং কেউ তাদের উত্ত্যক্ত করবে না।"
🔹 এখানে "জিলবাব" (جَلَابِيبِهِنَّ) শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে, যা একটি বড় চাদর বা আবরণ বোঝায়, যা পুরো শরীর ঢেকে দেয়। এটি মাথাসহ পুরো দেহ আবৃত করার নির্দেশনাই ইঙ্গিত করে।
গভীর বিশ্লেষণ ও উপসংহার:
➡ সার সংক্ষেপ: আল-কোরআনে সরাসরি "মাথা ঢাকার" কথা বলা হয়নি, তবে পর্দার নির্দেশনার মধ্যে "খিমার" ও "জিলবাব" পরার কথা বলা হয়েছে, যা সেই সময় মাথা ও শরীর ঢাকার জন্য ব্যবহৃত হতো।
💡আপনি যদি আরও বিস্তারিত গবেষণা চান, তাহলে শব্দতাত্ত্বিক (lexical) ও ঐতিহাসিক ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করেও দেখা যেতে পারে। 😊
Leave a Comment