ভূমিকম্প থেকে বাঁচার উপায়? সামাজিক অন্যায় ও সম্মিলিত শাস্তি? বুদ্ধিজীবিদের ভুমিকা সম্পর্কে কী বলে আল কোরআন?

 ━━━━━━ ━━━━━━

ভূমিকম্প: তাওবা, ইস্তেগফার, দুআ, তাসবিহ ও করণীয়:


সামাজিক অন্যায় ও সম্মিলিত শাস্তি:

...প্রত্যেক ব্যক্তি তার নিজ কৃতকর্মের জন্য দায়ী, কেউ অন্যের বোঝা বহন করবে না..." (সূরা আল-আনআম: ৬:১৬৪)

তবে, যদি কোনো সমাজ বা জাতি সামগ্রিকভাবে অন্যায় ও পাপাচারে লিপ্ত হয়, তখন আল্লাহ সামগ্রিকভাবে শাস্তি দিতে পারেন। যেমন, সূরা আনফাল (৮:২৫)-এ বলা হয়েছে:

"আর তোমরা এমন এক ফিতনার (অশান্তি, বিপর্যয়) থেকে সতর্ক থাক, যা কেবল সীমালঙ্ঘনকারীদের ওপরই আপতিত হবে না। আর জেনে রাখ, আল্লাহ শাস্তি দানে কঠোর।" (সূরা আনফাল: ৮:২৫) 

এই আয়াত থেকে বোঝা যায়, কোনো সমাজ যদি সামগ্রিকভাবে অন্যায়ে জড়িয়ে পড়ে, তবে সেই শাস্তি শুধু অপরাধীদের ওপরই আসে না, বরং নির্দোষরাও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।

বুদ্ধিজীবিদের ভুমিকা (intellectual's role)?

"তবে কেন তোমাদের পূর্ববর্তী জাতিদের মধ্যে এমন কিছু বুদ্ধিমান লোক (উলিন নুহা) ছিল না, যারা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করা থেকে নিষেধ করত? তবে তাদের মধ্যে কেবল সামান্য কিছু লোকই ছিল, যাদের আমি রক্ষা করেছিলাম। কিন্তু যারা জুলুম করেছিল, তারা সেই ভোগ-বিলাসের পিছনেই পড়ে ছিল, যা তাদেরকে দেওয়া হয়েছিল, আর তারা ছিল অপরাধী!"


📌 ভূমিকম্প, বন্যা, মহামারি: সতর্কবার্তা নাকি শাস্তি? ভূমিকম্পের কারণ-

ভূমিকম্প, বন্যা, মহামারির মতো দুর্যোগগুলো কেবল প্রাকৃতিক ঘটনা নয়; অনেক সময় এগুলো আল্লাহর পক্ষ থেকে সতর্কবার্তা হতে পারে, অপরাধের কারনেও।

ভূপ্রাকৃতির ভারসাম্য বিনষ্টের পরিণাম:

📖 "সূর্য ও চন্দ্র নির্ধারিত হিসাব অনুযায়ী চলছে। আর তারকা ও বৃক্ষ (আল্লাহকে) সিজদা করে। আর আকাশকে তিনি সুউচ্চ করেছেন এবং সেখানে ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠা করেছেন, যাতে তোমরা ভারসাম্য নষ্ট না করো। ন্যায্যভাবে ওজন করো এবং ওজনে কমতি কোরো না। আর পৃথিবীকে তিনি সকল সৃষ্টির জন্য বিছিয়ে দিয়েছেন" -সূরা আর-রহমান (৫৫:৫-১০


📖 আর পৃথিবীর মধ্যে তিনি স্থাপন করেছেন পর্বতমালা যেন, তোমাদের নিয়ে সেটা স্থির থাকে এবং নদনদী ও পথসমূহ, যেন তোমরা সঠিকপথ পাও” (সূরা আন-নাহল ১৬:১৫)

তাহলে অতি বিলাসিতার লোভে প্রাকৃতিক স্থাপনা (পাহাড়-পর্বত-টিলা-নদ নদী) ধ্বংস করার জন্য দায়ী কে? এটা যে পাপ-অন্যায়-অপরাধ তা কি আমরা  বিশ্বাসীরাও বুঝি?

📌 সবকিছুর চান্স 50/50: পৃথিবীতে স্থায়ী কিছুর সুযোগ নাই-

📖 "তোমরা কি নিশ্চিত যে, তিনি তোমাদেরকে ভূগর্ভে বিলীন করে দেবেন না অথবা তোমাদের উপর পাথরের বৃষ্টি বর্ষণ করবেন না?" (সূরা আল-মুলক ৬৭:১৬-১৭)


📌মানুষের অতিরিক্ত চাহিদা: প্রাকৃতিক বিপর্যয়:

"জলে ও স্থলে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে মানুষের নিজ হাতের কামাইয়ের কারণে, যাতে আল্লাহ তাদেরকে তাদের কিছু কর্মের শাস্তি আস্বাদন করান, যাতে তারা ফিরে আসে"-(সূরা আর-রূম ৩০:৪১)


📌শাস্তি ও পরীক্ষার মাধ্যম:

"অতঃপর আমি তাদের প্রত্যেককেই তার অপরাধের কারণে পাকড়াও করেছি; কারো প্রতি আমি প্রেরণ করেছি প্রচণ্ড বাতাস, আর কাউকে পেয়েছি বজ্রাঘাতে; কাউকে করেছি ভূগর্ভে প্রোথিত এবং কাউকে করেছি নিমজ্জিত। আল্লাহ তাদের প্রতি জুলুম করেননি; বরং তারা নিজেদের প্রতি জুলুম করেছিল"  সূরা আনকাবূত (২৯:৪০)


📌নিজেরা ভলো হতে চাইলে আল্লাহ করবেন কেন?

"এটা এ কারণে যে, আল্লাহ কোনো জাতির ওপর যে অনুগ্রহ দান করেন, তা কখনো পরিবর্তন করেন না যতক্ষণ না তারা নিজেরাই নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন করে। আর নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।" সূরা আল-আনফাল (৮:৫৩)


📌অত্যাচাররত জনপদসমূহকে অধিগ্রহণ: 

"এভাবেই তোমার রব যখন কোনো জনপদকে অন্যায়ের কারণে পাকড়াও করেন, তখন তাঁর পাকড়াও অত্যন্ত কঠোর ও মর্মন্তুদ হয়ে থাকে। নিশ্চয়ই এতে তার জন্য নিদর্শন রয়েছে, যে পরকালের শাস্তিকে ভয় করে..." সূরা হুদ (১১:১০২-১০৩)


📌আল্লাহর আয়তসমূহ অগ্রাহ্যের ফলাফল: 

📖"আর যদি জনপদের অধিবাসীরা ঈমান আনতো ও তাকওয়া অবলম্বন করতো, তবে অবশ্যই আমরা তাদের জন্য আকাশ ও পৃথিবীর কল্যাণসমূহ উন্মুক্ত করে দিতাম। কিন্তু তারা মিথ্যা বলে অস্বীকার করেছিল, তাই আমরা তাদের কৃতকর্মের জন্য তাদের পাকড়াও করেছিলাম।"  সূরা আল-আ'রাফ (৭:৯৬) (see for more 7:93)


📖"অতঃপর আমরা প্রত্যেককে তার গুনাহের কারণে পাকড়াও করলাম; তাদের মধ্যে কারও ওপর প্রেরণ করলাম প্রস্তরবৃষ্টি, কারওকে আঘাত করল প্রবল শব্দ, কাউকে ভূমিতে ধসিয়ে দিলাম, আবার কাউকে ডুবিয়ে দিলাম। আর আল্লাহ তাদের প্রতি অন্যায় করেননি, বরং তারা নিজেরাই নিজেদের প্রতি অন্যায় করেছে।"  সূরা আল-আনকাবুত (২৯:৪০)  

📌বিলাসী মানুষদের  দুষ্কর্ম :

 "যখন আমি কোনো জনপদ ধ্বংস করতে চাই, তখন আমি তাদের বিলাসী মানুষদের নির্দেশ দেই (সংশোধনের), কিন্তু তারা সেখানে দুষ্কর্ম করতে থাকে। ফলে তাদের ওপর শাস্তির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয় এবং আমি তা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দেই।" সূরা আল-ইসরা (১৭:১৬)


📌অশ্লীলতার ছড়াছড়ি:

"বলুন, আমার রব শুধুমাত্র তার অশ্লীলতা, যা প্রকাশ্য ও গোপনে, এবং যা শিরক করা হয়েছে, তা নিষিদ্ধ করেছেন। এবং তিনি সৎ কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন।" সূরা আল-আরাফ (৭:৩৩


বাঁচার উপায়? আমরা কী করতে পারি?

ভূমিকম্পসহ সকল প্রাকৃতিক দুর্যোগ মানুষের জন্য একটি পরীক্ষা ও সতর্কবার্তা। কুরআনে আল্লাহ আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন কীভাবে এই সময় তাওবা ও ইস্তেগফার (অনুতাপ-আত্মশুদ্ধি ও ক্ষমা প্রার্থনা) দুআ, তাসবিহ ও যিকির করতে হয়

📌ভালোর দিকে ফিরিয়ে আনা:

"হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর এবং তাঁর প্রতি ফিরে আসো, তিনি তোমাদের ওপর আকাশ থেকে প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন এবং তোমাদের শক্তি বৃদ্ধি করবেন। তোমরা অপরাধীদের মতো মুখ ফিরিয়ে নিও না।" সূরা হূদ (১১:৫২),  (সূরা নূহ ৭১:১০-১৩)


📌আর আল্লাহ তাদের শাস্তিদাতা নন, যখন তারা ক্ষমা প্রার্থনা করে-8:33

📌কী করবেন আল্লাহ তোমাদের শাস্তি দিয়ে, যদি তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো আর তোমরা ঈমান আনো!-4:147


📌আর যারা পাপসমূহ করে, এরপর সেগুলোর পরবর্তীতে তারা তওবা করে এবং তারা ঈমান আনে, নিশ্চয়ই তোমার রব সেসবের পরেও অবশ্যই ক্ষমাশীল, দয়ালু-7:153

📌আল্লাহর দিকে ফিরে যাওয়া ও ভালো কাজ করা:

"আর নিয়ামতের মধ্য থেকে তোমাদের কাছে যতটুকু আছে, তাহলে তা আল্লাহর পক্ষ থেকেই। তারপর যখন তোমাদেরকে দুর্দশা স্পর্শ করে তখন তাঁর কাছেই তোমরা অনুনয় বিনয় করো। 
সূরা আন-নাহল (১৬:৫৩)

✨🌿 · · · · · · 🌿✨

তাওবা ও ইস্তেগফার (অনুতাপ-আত্মশুদ্ধি ও ক্ষমা প্রার্থনা) দুআ, তাসবিহ ও যিকির:


🔹 رَبِّ اغْفِرْ لِي 

রব্বিগফিরলী!
📌 অর্থ: হে আমার রব! আমাকে ক্ষমা করুন! (সূরা আল-আ‘রাফ ৭:১৫১, ৩৮:৩৫, ৭১:২৮)

رَبَّنَا ظَلَمْنَا أَنفُسَنَا وَإِن لَّمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحَمْنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِينَ۞

📌হে আমাদের রব! আমরা আমাদের নিজেদের উপর জুলুম করেছি। আর যদি আপনি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন এবং আমাদেরকে অনুগ্রহ না করেন, নিশ্চয়ই আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব-7:23

إِنَّهُ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ۞

📌নিশ্চয়ই তিনি, তিনিই তওবা কবুলকারী, দয়ালু-২:৩৭

سُبْحَانَكَ تُبْتُ إِلَيْكَ وَأَنَاْ أَوَّلُ الْمُؤْمِنِينَ 

📌পবিত্রতা আপনারই, আমি আপনার কাছে তওবা করলাম এবং আমি অগ্রবতীর্ মুমিন- 7:143 (20:82-84)|

إِنِّي تُبْتُ إِلَيْكَ وَإِنِّي مِنَ الْمُسْلِمِينَ

📌নিশ্চয়ই আমি আপনার কাছে তওবা করলাম। আর নিশ্চয়ই আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত। -46:15

 وَ تُبۡ عَلَیۡنَا ۚ اِنَّکَ اَنۡتَ التَّوَّابُ الرَّحِیۡمُ ﴿۱۲۸
 📌এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন। নিশ্চয়ই আপনি, আপনিই ক্ষমাশীল, দয়ালু-2:128 

رَبَّنَا إِنَّنَا آمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ

রব্বানা- ইন্নানা- আ-মান্না- ফাগফির লানা- যুনূবানা-ওয়া ক্বিনা-‘আযা-বান্নার-।

📌হে আমাদের রব! নিশ্চয়ই আমরা ঈমান এনেছি। সুতরাং আমাদের জন্য আমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করুন আর আগুনের শাস্তি থেকে আমাদের রক্ষা করুন-আল কুরআন ৩:১৬।

رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ

📌রব্বানা- আ-তিনা-ফিদ্ দুন্ইয়া-হাসানাতাওঁ অফিল্ আ-খিরাতি হাসানাতাওঁ অক্বিনা-‘আযা-বান্না-র।
হে আমাদের রব! আমাদেরকে দুনিয়ার মধ্যে কল্যাণ ও আখিরাতের মধ্যে কল্যাণ দিন। এবং আমাদেরকে আগুনের শাস্তি থেকে রক্ষা করুন-আল কুরআন ২:২০১

رَبَّنَا إِنَّنَا آمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ۞
"রব্বানা- ইন্নানা- আ-মান্না- ফাগফির লানা- যুনূবানা-ওয়া ক্বিনা-‘আযা-বান্নার।"
 📌হে আমাদের রব! নিশ্চয়ই আমরা ঈমান এনেছি। সুতরাং আমাদের জন্য আমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করুন আর আগুনের শাস্তি থেকে আমাদের রক্ষা করুন!-3:16 

رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا وَإِسْرَافَنَا فِي أَمْرِنَا وَثَبِّتْ أَقْدَامَنَا وَانصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ۞

📌হে আমাদের রব! আমাদেরকে আমাদের পাপসমূহ ও আমাদের কাজকর্মের মধ্যে আমাদের সীমালঙ্ঘনকে ক্ষমা করুন এবং আমাদের পদক্ষেপসমূহকে সুদৃঢ় রাখুন আর অবিশ্বাসী  জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আমাদের সাহায্য করুন-3:147

رَبِّ نَجِّنِى وَأَهْلِى مِمَّا يَعْمَلُونَ۞

📌হে আমার রব! তারা যা করছে তা থেকে আমাকে ও আমার পরিবারকে রক্ষা করুন!-26:169 

رَّبِّ اغۡفِرۡ وَ ارۡحَمۡ وَ اَنۡتَ خَیۡرُ الرّٰحِمِیۡنَ 

রব্বিগফির ওয়ারহাম অআংতা খইরুর র-হিমীন্।

📌 হে আমার রব! ক্ষমা করুন এবং দয়া করুন, আপনিইতো দয়ালুদের শ্রেষ্ঠ-আল কুরআন ২৩:১১৮ ।

 

لَئِن لَّمْ يَرْحَمْنَا رَبُّنَا وَيَغْفِرْ لَنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِينَ

লায়িল্লাম্ ইয়ারহামনা-ওয়া ইয়াগফিরলানা- লানাকূনান্না মিনাল্ খা-সিরীন্। 

📌অবশ্য যদি না আমাদের রব আমাদের ওপর রহমত করেন ও আমাদের জন্য ক্ষমা করেন, অবশ্যই আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব-আল কুরআন ৭:১৪৯ ।  


 ভুমিকম্পের বিশেষ দুআ: তবে শর্ত প্রযোজ্য:
 তিনি বললেন, আমার শাস্তি, যাকে চাই তাকে আমি সেটা দিয়ে আক্রান্ত করি। আর আমার রহমত সবকিছুকেই পরিব্যাপ্ত করে রেখেছে। অতএব, অচিরেই আমি সেটা তাদের জন্য লিখে দিব, যারা তাকওয়া অবলম্বন করে এবং আত্মশুদ্ধি করে আর তাদের জন্যও, যারা আমাদের আয়াতসমূহের প্রতি ঈমান আনে-৭:১৫৬ 
(শুধুমাত্র আয়াতে বিশ্বাসীরাই মুসলিম, দ্র: ৪৩:৬৯, ৩০:৫৩, ২৭:৮১)

আর মূসা তার কওমের সত্তরজন লোককে আমাদের নির্ধারিত সময়ের জন্য বাছাই করল। এরপর যখন ভূমিকম্প তাদেরকে আক্রান্ত করল, সে বলল!


 رَبِّ لَوۡ شِئۡتَ اَہۡلَکۡتَہُمۡ مِّنۡ قَبۡلُ وَ اِیَّایَ ؕ اَتُہۡلِکُنَا بِمَا فَعَلَ السُّفَہَآءُ مِنَّا ۚ اِنۡ ہِیَ اِلَّا فِتۡنَتُکَ ؕ تُضِلُّ بِہَا مَنۡ تَشَآءُ وَ تَہۡدِیۡ مَنۡ تَشَآءُ ؕ اَنۡتَ وَلِیُّنَا فَاغۡفِرۡ لَنَا وَ ارۡحَمۡنَا وَ اَنۡتَ خَیۡرُ الۡغٰفِرِیۡنَ   وَٱكْتُبْ لَنَا فِى هَٰذِهِ ٱلدُّنْيَا حَسَنَةًۭ وَفِى ٱلْـَٔاخِرَةِ إِنَّا هُدْنَآ إِلَيْكَ ۚ۱۵۵
রাব্বি লাউ শিতা আহলাকতাহুম মিন ক্বাবলু ওয়া ইয়্যায়া; আতুহলিকুনা বিমা ফা'আলাস সুফাহাউ মিন্না? ইন হিয়া ইল্লা ফিতনাতুকা তুদিল্লু বিহা মান তাশাউ ওয়া তাহদী মান তাশাউ, আনতা ওয়ালিয়্যুনা ফাগফির লানা ওয়ারহামনা, ওয়া আন্তা খাইরুল গাফিরীন।"


হে আমার রব! আপনি যদি চাইতেন পূর্বেই তাদেরকে ও আমাকে ধ্বংস করতে পারতেন। আমাদের মধ্য থেকে নির্বোধরা যা করেছে সে কারণে কি আপনি আমাদেরকে ধ্বংস করবেন? নিশ্চয়ই সেটা কেবল আপনার পরীক্ষা। সেটা দিয়ে যাকে চান আপনি পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে চান আপনি হিদায়েত করেন। আপনিই আমাদের অভিভাবক। সুতরাং আমাদের ক্ষমা করে দিন এবং আমাদেরকে অনুগ্রহ করুন। আর আপনিই ক্ষমাশীলদের উত্তম আর আমাদের জন্য এই দুনিয়ার মধ্যে ও আখিরাতের মধ্যে কল্যাণ লিখে দিন। নিশ্চয়ই আমরা, আমরাই আপনার দিকে পথ ধরেছি-(সূরা আল-আ'রাফ ৭:১৫৫-156)
(এটি ভূমিকম্পের সময় সালামুন আলা মূসা-এর পেশকৃত একখানি বিশেষ দুআ/দরখাস্ত (ইস্তেগফারসহ): 

🔹 لَا إِلٰهَ إِلَّا أَنتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنتُ مِنَ الظَّالِمِينَ
"লা-ইলাহা ইল্লা-আংতা সুবহা-নাকা ইন্নী কুন্তু মিনাজ জোয়া-লিমীন।"


📌 অর্থ: আপনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, আপনি পবিত্র! আমি জালিমদের অন্তর্ভুক্ত (সূরা আল-আম্বিয়া ২১:৮৭)


যারা, যখন বিপদ তাদের আক্রান্ত করে, তারা বলে-


 اِنَّا لِلّٰہِ وَ اِنَّاۤ اِلَیۡہِ رٰجِعُوۡنَ ﴿۱۵۶
নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহরই জন্য আর নিশ্চয়ই আমরা তাঁর দিকেই প্রত্যাবর্তনকারী-2:256


৫. সাদাকাহ (দান-খয়রাত) করা:

📖 "তোমরা তোমাদের ধন-সম্পদ থেকে আল্লাহর পথে ব্যয় করো এবং নিজেদের ধ্বংসের দিকে নিক্ষেপ করো না।" (সূরা আল-বাকারা ২:১৯৫)

🔹 কি করা যেতে পারে?
✅ গরীব ও বিপদগ্রস্তদের সাহায্য করা।
✅ এতিম- দুঃস্থদের জন্য দান করা।


৬. মানুষকে সাহায্য করা ও ধৈর্য ধারণ করা:

ভূমিকম্পের পর ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানো এবং ধৈর্য ধারণ করা জরুরি।

 "আর ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও। যখন তাদের কোনো বিপদ আসে, তখন তারা বলে: 

🔹  اِنَّا لِلّٰہِ وَ اِنَّاۤ اِلَیۡہِ رٰجِعُوۡنَ 

"ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিঊন" 

📌 ‘নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহর জন্য এবং নিশ্চয়ই আমরা তাঁর দিকেই প্রত্যাবর্তনকারী’"  (সূরা আল-বাকারা ২:১৫৫-১৫৬)


📌ভূমিকম্পের সময় করণীয়:

ভূমিকম্প ও অন্যান্য দুর্যোগ আমাদের জন্য একটি পরীক্ষা এবং আল্লাহর দিকে ফিরে আসার সুযোগ। তাই আমাদের উচিত: 

✅ আর কাল ক্ষেপণ না করে এখনই তাওবা করে আল কোরআন ভিত্তিক ঈমান এনে দোয়া ও ইস্তিগফার করা, বিরতিহীন আয়াত অনুশীলণ করা।

✅ সাদাকাহ (দান-খয়রাত) করা, যা বিপদ থেকে বাঁচতে সহায়ক।
✅ তওবা করা ও আল্লাহর নিকট রহমত প্রার্থনা করা।
✅ মানুষকে সহায়তা করা, বিশেষ করে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করা।

আল্লাহ আমাদের  ভূমিকম্প এবং অন্যান্য বিপর্যয় থেকে রক্ষা করুন এবং আমাদের ওপর দয়া করুন। 🤲


উপসংহার

প্রকৃতপক্ষে, ভূমিকম্প ও অন্যান্য দুর্যোগ আমাদের জন্য সতর্কবার্তা। এটি আমাদের পাপমুক্ত জীবনযাপনের অনুপ্রেরণা হওয়া উচিত। আল্লাহ বলেন:

"আল্লাহ কোনো জাতির অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ না তারা নিজেরা নিজেদের অবস্থার পরিবর্তন করে।" (সূরা আর-রাদ: ১৩:১১)

সুতরাং, আমাদের উচিত নিজেদের সংশোধন করা, আল্লাহর দিকে ফিরে যাওয়া এবং ন্যায় ও সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করা। আল্লাহ আমাদের সকলকে সঠিক পথ দেখান! 

📌 শেয়ার করুন যাতে অন্যরাও উপকৃত হয়!
✍ আপনার মতামত ও অভিজ্ঞতা কমেন্টে জানাতে জানাতে পারেন!

Powered by Blogger.