কুরআন স্টাডি: নাযিলকৃত অহী অনুশীলনে সংযোগ স্থাপন ও বিশেষ সময়সূচি-
কুরআন স্টাডির উপযুক্ত সময়সূচি (উপরোক্ত আয়াত দ্র:):
✅ ফজরের আগে ৯০ মিনিট (সূর্যোদয়ের পূর্ব পর্যন্ত)।
✅ মাগরিব থেকে এশার মাঝে ৯০ মিনিট।
✅ মোট: ৩ ঘণ্টা
এই ৩ ঘণ্টা আমাদের রূহের রিযিকের জন্য বরাদ্দ রাখা উচিত (মানে একাগ্র চিত্তে কুরআন স্টাডি-পড়াশুনা)। বিইজনিল্লাাহ!
এই সময়সূচি মাথায় রেখেই দিনের কর্মসূচি সাঁজাতে হবে। তা না হলে আপনার বডি (দৃশ্যমান নফস) আপনাকে পারমিট নাও করতে পারে। ইল্লা মা-শাআল্লাহ!
স্টাডির পদ্ধতি:
আল্লাহ আমাদের নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী কুরআন পড়তে ও বুঝতে বলেছেন। কুরআনের নির্দেশ অনুযায়ী ধীরে ধীরে এবং অর্থ বুঝে (point to point) পড়তে হবে:
رَّبِّ زِدۡنِیۡ عِلۡمًا ﴿۱۱۴
রব্বি জিদনি ইলমা
“আর তুমি বলো, হে আমার রব! আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করুন।” (সূরা ত্বাহা ২০:১১৪)
রাতে আল কুরআন স্টাডি:
দিনের ব্যস্ততার কারণে রাতের কুরআন স্টাডি বিশেষভাবে গুরুত্ব পেয়েছে:
“নিশ্চয়ই দিনের মধ্যে তোমার জন্য দীর্ঘ ব্যস্ততা রয়েছে।” (সূরা মুযযাম্মিল ৭৩:৭)
রাতের কুরআন স্টাডির নির্দেশনা:
✅ “ওহে আবৃতকারী! জাগো, রাতের কিছু অংশ ছাড়া, তার অর্ধেক অথবা তার থেকে কিছু কমাও, অথবা তার উপর বাড়াও। আর কুরআন আবৃত্তি করো, তারতীলের সাথে।” (সূরা মুযযাম্মিল ৭৩:১-৪)
✅ “নিশ্চয়ই রাত্রিজাগরণ, সেটা আত্মসংযমে অধিক প্রভাবশালী এবং উচ্চারণের জন্য অধিক উপযোগী।” (সূরা মুযযাম্মিল ৭৩:৬)
✅ “আর তোমার রবের নাম স্মরণ করো এবং তাঁর দিকে একাগ্রচিত্তে মনোনিবেশ করো।” (সূরা মুযযাম্মিল ৭৩:৮)
এটি ৯ ঘণ্টা রাতের সময়কাল অনুযায়ী কোরআন অধ্যয়ন এবং ইবাদতের সময় ভাগের গ্রাফ যা সূরাহ মুজাম্মিল (73:6, 73:20) এর নির্দেশ অনুযায়ী । এখানে রাতের অংশগুলো ভাগ করা হয়েছে:
-
রাতের অর্ধেক (৪.৫ ঘণ্টা): (50%): রাতের প্রথম অর্ধাংশে কোরআন অধ্যয়ন।
-
রাতের ৩ ভাগের এক ভাগ (৩ ঘণ্টা): (33.3%): রাতের এক তৃতীয়াংশ সময়কে অধ্যয়ন বা ইবাদতের জন্য নির্ধারণ করা।
-
রাতের ২/৩ অংশ (৬ ঘণ্টা) (66.6%) রাতে বেশিরভাগ সময় ইবাদত বা কোরআন পড়ার জন্য নির্ধারিত।
-
রাতের ৩/৪ অংশ (৬.৭৫ ঘণ্টা) (75%) রাতের বেশিরভাগ সময় ইবাদত বা কোরআন অধ্যয়ন করার জন্য।
এভাবে আপনি রাতের সময়কে কোরআন অধ্যয়ন এবং ইবাদতের জন্য বিভিন্ন ভাগে বিশ্লেষণ করতে পারেন।
রাতের প্রহরে সালাত: তাহাজ্জুদ ও করণীয়?
রাতের
প্রহরে সালাত. |
কী আমল? |
কে বা কারা করে? |
৭৩:১-৮ |
আল
কোরআন স্টাডি |
সালামুন
আলা মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা/সঙ্গীরা |
৭৩:২০ |
যে
অবস্থায় থাকুন না কেন আল
কুরআন পাঠ |
সালামুন
আলা মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা/সঙ্গীরা |
৩:১১৩ |
|
আহলে
কিতাবেরা |
৩৯:৯ |
রবরে রহমতরে প্রত্যাশা করে |
আনুগত্য প্রকাশকারী,
সিজদাকারী হয়ে ও দাঁড়িয়ে, সে আখিরাতকে ভয় করে; মূলত বোধসম্পন্নরাই (উলিল আলবাব) উপদেশ গ্রহণ করে |
২৫:৬৩-৭৭ |
সিজদারত ও দাঁড়ান অবস্থায়, দুআ-২৫:৬৫, ২৫:৭৪ |
এবাদুর
রহমান ও তাদের বৈশিষ্ট্য,
দ্র: ২৫:৬৩-৭৭ |
১৭:৭৯ |
তাহাজ্জুদ: বিশেষ (বংঢ়বপরধষ)।
[আনফালের শাব্দিক অর্থ (ঘধভষ): বিশেষ দায়িত্ব ও কর্তব্য-১৭:৭৯/এমন সব কর্ম যা আবশ্যক এর চেয়ে বেশী-১৭:৭৯ বিশেষ অনুগ্রহ/যুদ্ধলব্ধ সম্পদ-৮:১ বিশেষ উপহার মরভঃ-২১:৭২/সবিশেষ সৎকর্মশীলতা-২১:৭২ শুধুমাত্র রসূলের জন্যই প্রযোজ্য/খালেস এর একটি দৃষ্টান্ত বুঝতে দ্র:-৩৩:৫০] |
দ্র:
৭৩:১-৮, ৭৩:২০ |
৫১:১৫-২১ |
ক্ষমা
প্রার্থনা |
মুত্তাকী, মহসিনীন |
৩:১৬-১৭ |
দুআ
(৩:১৬) |
ধৈর্যশীলরা ও সত্যবাদীরা এবং অনুগতরা ও ব্যয়কারীরা আর শেষরাতে ক্ষমাপ্রার্থনাকারীরা |
৩২:১৫-১৬ |
সিজদায় লুটিয়ে পড়ে এবং প্রশংসাসহ তাদের রবের তাসবিহ করে| আর তারা অহংকার করে না| তারা ভয় ও আশা নিয়ে তাদের রবকে ডাকে এবং আমরা তাদেরকে যা রিযিক (জীবন ব্যবস্থা/জীবনবোধ) দিয়েছি তা হতে ব্যয় করে-32:15-16
|
মূলত তারা আমাদরে আয়াতসমূহরে প্রতি ঈমান রাখে |
৭৬:২৬ |
সিজদাহ করা, তাসবীহ করা (৭৩:১-৮) |
|
৪৮:২৯ |
অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি সন্ধান করে |
|
২০:১৩০ |
তাসবিহ করো রাতের কিছু সময়ে |
|
৫২:৪৮-৪৯ |
তাসবীহ করো রবের প্রশংসার সাথে, যখন তুমি উঠবে । |
|
৫০:৪০ |
তাসবীহ |
|
দু'আ-যিকর-তাসবিহ:
|
|||
পৃষ্ঠা নং/ দুআ নং |
নোট |
সূরা ও আয়াত নম্বর |
|
|
|
|
23:118 |
|
|
|
23:109 |
|
|
|
28:16 |
|
|
|
2:201 3:147 (3:148) |
|
|
|
3:16 |
|
|
|
25:65-66 |
|
|
|
38:35 |
|
|
|
14:41 |
|
|
|
7:155-156 |
|
|
|
7:151 |
|
|
|
25:74 |
|
|
|
17:80-81 |
|
|
|
3:189-193 |
উপসংহার
আমাদের দৈনন্দিন জীবনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কমপক্ষে ৩ ঘণ্টা আমরা রূহের রিযিকের জন্য নির্ধারণ করতে পারি। এই সময় কুরআন স্টাডি, সালাত ও আল্লাহর স্মরণে ব্যয় করা উচিত। এতে মনোজাগতিক প্রশান্তি আসে এবং দুনিয়া ও আখিরাত উভয় জগতে কল্যাণ লাভ করা সম্ভব হবে।
আল্লাহ আমাদের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলো যথাযথভাবে কাজে লাগানোর তাওফিক দান করুন!
Leave a Comment