📝 বিবাহপূর্ব পাত্র/পাত্রী যাচাই-বাছাই চেকলিস্ট:
📌 আল-কোরআনের নির্দেশনার আলোকে মুমিন পাত্র/পাত্রী নির্বাচন:
📖 "আর যারা বিয়ে করার সামর্থ্য পায় না, তারা যেন সংযম অবলম্বন করে যতক্ষণ না আল্লাহ তাদেরকে নিজ অনুগ্রহে অভাবমুক্ত করেন"-সূরা আন-নূর ২৪:৩৩ (দ্র: ৪:২৫-২৮)
🟢 এই চেকলিস্ট শুধুমাত্র তাদের জন্য প্রযোজ্য যারা কুরআন জানে, বুঝে এবং বিবাহের জন্য প্রস্তুত মনে করে।
[মুমিনের সংজ্ঞা-দ্র: আয়াত ৮:২, ২৩:১-১১]
🔽 নিচে স্ক্রল করুন এবং বিশেষ দুআর ভিডিও শুনতে পাবেন!
📖 বিবাহের
বৈধতা ঈমানের উপর নির্ভরশীল: ঈমানই সম্পর্কের মানদণ্ড: ঈমান যাচাইয়ের নির্দেশ: সুরা মুমতাহিনা ৬০:১০
⋆。゚☁︎。⋆。 ゚☾
゚。⋆
⋆。゚☁︎。⋆。 ゚☾ ゚。⋆
🧕 নারীর যোগ্যতা (আল-কুরআনের আলোকে-মোমেন নারী):
✅ ঈমানদার ও চরিত্রবান:
🔹 আল্লাহভীরু, লজ্জাশীলা, সততা ও নৈতিকতায় দৃঢ়
📖 "নিশ্চয়ই সৎ নারীরা অনুগত হয় এবং আল্লাহ যা সংরক্ষণ করতে বলেছেন তা গোপনে সংরক্ষণ করে" — সূরা আন-নিসা ৪:৩৪ (66:12)
✅ পরিবারের প্রতি দায়িত্বশীল:
📖 "... এবং তিনি তাকে (পুরুষকে) তার ধন-সম্পদ থেকে ব্যয় করতে বলেছেন..." — সূরা আন-নিসা (৪:৩৪), সূরা আল-ফুরকান (শ্বশুরবাড়ি-২৫:৫৪)✅ পর্দার প্রতি যত্নবান:
— সূরা আন-নূর ২৪:৩১ (আরও দ্র: ৩৩:৫৩, ৩৩:৫৯)
👳 পুরুষের যোগ্যতা (আল-কুরআনের আলোকে-মোমেন পুরুষ):
✅ চরিত্রে উত্তম ও পবিত্র: •পর্দার প্রতি যত্নবান: সূরা আন-নূর ২৪:২৬, সূরা আন-নূর ২৪:৩0
✅ ঈমান ও আক্বিদা যাচাই:
• 🔲 পাত্র/পাত্রী কি কেবল আল্লাহকেই একমাত্র বিধানদাতা (হাকিম) মনে করে (কেবলমাত্র আল কোরআন অনুয়ায়ী)?
সূরা: ৪:১১৬, ১২:১০৩, ১২:১০৬, ১২:৬৭, ৬:৬৭, ৭:৫৪, ১২:৪০, ৪২:২১, ৯:৩১, ৬:১৪১
• 🔲 তারা কি আল্লাহ, সালামুন আলা মুহাম্মদ (সাঃ) ও সকল রাসূলগণের প্রতি ঈমান রাখে ও অনুসরণ করে? না, অন্য কোন পথ, মতাদর্শে বিশ্বাসী?- সূরা: ৩:৮৪, ৪:১৩৬, ২:২৮৫ (১৬:১২৩, ৩:৯৫, ১৬:১২০)
• 🔲 তারা কি কুরআনকেই একমাত্র হিদায়াত ও জীবনবিধান হিসেবে মেনে নিয়েছে? -সূরা: ২:৩৮, ৭:৩, ৬:১৫৩, ৪৫:৬
• 🔲 তারা কি তাওহীদে বিশ্বাসী এবং শিরক থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত?- সূরা: ৪:১১৬, 12:106 আয়াতসমেত উপরের আয়াতসমূহ
✅ আমল ও দ্বীন পালন:
• 🔲 ঈমান কি শুধুমাত্র কথার মধ্যে সীমাবদ্ধ, নাকি আমলেও প্রকাশ পায়?- সূরা: ৬০:১০
• 🔲 তারা কি নিয়মিত কুরআন অধ্যয়ন, সালাত, সিয়াম ও তাকওয়ার সাথে জীবন যাপন করে?- সূরা: ২৯:৪৫, ৩৫:২৯, ৬:১৯, ২:১৭৭
• 🔲 তারা কি কুরআনের বিধান অনুযায়ী দ্বীন পালন করে? -৭:৩, ১৬:১০৬, ১৬:৮৯, ৬:১৫৫, ৩৮:২৯
• 🔲 হালাল-হারামের জ্ঞান ও তার প্রতি আনুগত্য আছে?
সূরা: ৬:১৫১-১৫৩, ১৭:২২-৪১
• 🔲 তাওবা ও আত্মশুদ্ধির জ্ঞান (সূরা তাহা ২০:৮২, ৭:২৩)
✅ চরিত্র ও নৈতিকতা:
• 🔲 সততা, আমানতদারি, পর্দা ও লজ্জাশীলতায় সুসজ্জিত?
সূরা: ২৪:৩০, ২৪:৩১, ৬৬:১২ (২৮:২৩-২৮)
• 🔲 ব্যভিচার, হারাম সম্পর্ক (পরকীয়া) ও সন্দেহজনক আচরণ থেকে মুক্ত?
সূরা: ২৪:৩, ২৪:২৬, ২৪:২, ১৭:৩২, ২৪:২১, ৫৮:১০, ২৪:১৯, ২৫:৬৮
• 🔲 খারাপ অভ্যাস বা চরিত্রগত দুর্বলতা থেকে বিরত?
✅ সামাজিক ও পারিবারিক প্রস্তুতি:
• 🔲 কি দ্বীনী পরিবেশে (আল কুরআনের অনুসরণে, সালামুন আলা মুহাম্মদের পথে) বড় হয়েছে?
• 🔲 দ্বীনভিত্তিক পরিবার গঠন এবং সন্তানদের কুরআনমাফিক পরিবেশে বড় করার মানসিকতা আছে?
• 🔲 জান্নাতমুখী দাম্পত্য জীবনের উদ্দেশ্য রাখে?
সূরা: ৪৩:৬৮–৭০, ১৩:২৩–২৪, ৫২:২১, ৩৬:৫৫–৫৬
• 🔲 ইচ্ছাকৃত বা পরোক্ষভাবে কোনো শিরকী কাজে লিপ্ত নয়?
• 🔲 আত্মীয়তার দায়িত্বশীলতা, বিশেষ করে শ্বশুরবাড়ি ও দুই পরিবারের প্রতি সচেতন?-সূরা: ২৫:৫৪
📌 বিবাহের পূর্বশর্ত ও সাবধানতা (সংক্ষিপ্ত তালিকা): precautionary conditions
শর্ত / ঝুঁকি |
কোরআনিক ভিত্তি |
করণীয় |
|
|
|
ঈমানের
অমিল – বিশ্বাসের দ্বন্দ্ব |
২:২২১, 24:3 60:10, 24:26 |
আল
কোরআনুল হাকীমের আয়াত অনুযায়ী ঈমান যাচাই করা |
চরিত্র দুর্বলতা |
২৪:৩ |
ব্যভিচার এড়িয়ে চলা |
দ্বীনের প্রতি উদাসীনতা |
৯:২৩, 58:22 |
দ্বীনি অনুরাগ খতিয়ে দেখা |
দায়িত্বহীনতা |
৪:৩৪ |
দায়িত্ব নেওয়ার সক্ষমতা যাচাই |
আগ্রহের
ভিত্তি যদি হয় শুধু সৌন্দর্য/ধন/জন্ম |
৩৩:৫২, ১১:৭২–৭৩ |
ভেতরের গুণাবলিতে নজর |
❌ যাদের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক করা নিষেধ:
১. মুশরিক- পুরুষ হোক বা নারী (২:২২১, ২৪:৩, ৬০:১০, ২৪:২৬)।
২. আহলে কিতাব পুরুষের সাথে মুসলিম নারীর বিয়ে (আহলে কিতাব নারীদের সাথে বিবাহের শর্তসাপেক্ষ অনুমতি!-সূরা আল-মায়িদাহ-৫:৫)।
৩. নিকটাত্মীয়দের (মাহরাম) সাথে বিবাহ-(সূরা আন-নিসা ৪:২৩), ৩৩:৫০।
📖 বিবাহের শর্ত – ঈমান
আল কোরআনের বিধান মতে বিবাহের জন্য পাত্র ও পাত্রী-উভয়কেই ঈমানদার, মুমিন হওয়া আবশ্যক, যদি তারা একজন আরেকজনের উপযুক্ত সঙ্গী হিসেবে বিবাহ করতে চায়। কুরআনের বিভিন্ন আয়াতে এই বিষয়টি স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
🟩 মুশরিকদের সাথে বিবাহ নিষিদ্ধ — কারণ তারা আগুনের দিকে ডাকে-
📖 সূরা আল-বাকারা ২:২২১
"আর তোমরা মুশরিক নারীদের বিয়ে কোরো না, যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে। অবশ্যই একজন মুমিন দাসী একজন মুশরিক নারীর চেয়ে উত্তম, যদিও সে তোমাদেরকে আকৃষ্ট করে।
এবং তোমরা মুশরিকদের সাথে বিয়ে দিও না, যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে। অবশ্যই একজন মুমিন দাস একজন মুশরিক পুরুষের চেয়ে উত্তম, যদিও সে তোমাদেরকে মুগ্ধ করে।
তারা আগুনের দিকে ডাকে আর আল্লাহ তাঁর ইচ্ছায় জান্নাত ও ক্ষমার দিকে ডাকেন। এবং তিনি মানুষের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন, যেন তারা উপদেশ গ্রহণ করে"
এই আয়াত পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিচ্ছে যে, বিবাহের পূর্বশর্ত হলো — উভয়ের ঈমানদার হওয়া। এখানে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, যে নারী বা পুরুষ ঈমানদার নয়, তার সাথে বিবাহ বৈধ নয়। এমনকি সে যদি আকর্ষণীয়ও হয়, তবুও মুমিন দাস বা দাসী তার চেয়ে উত্তম।
(ঈমান বিষয়ে দ্র: আয়াত ৪:১৩৬, ২:১৩৬, ৩:৮৪, ২:২৮৫)⚠️ কেন তাদের সাথে বিবাহ নিষিদ্ধ? ➤ কারণ: “تدعوا إلى النار – তারা আগুনের দিকে ডাকে” — অর্থাৎ, ঈমানহীন জীবনসঙ্গী আপনাকে ঈমানহীনতার পথে টেনে নিতে পারে। ঈমানহীন পরিবেশে পরিবার ও সন্তানদের ঈমান নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
৫️⃣ শিরক ক্ষমাযোগ্য নয় — ঈমান ছাড়া কোনো সম্পর্ক গ্রহণযোগ্য নয়
📖 "নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁকে ক্ষমা করবেন না, যে তাঁর সাথে শরীক করে। আর তিনি যাকে ইচ্ছা এর চেয়ে কম (অপরাধ) ক্ষমা করে দেন। আর যে আল্লাহর সাথে শরীক করে, সে তো গুরুতর পথভ্রষ্ট হয়েছে"-সূরা আন-নিসা ৪:১১৬
⚠️ কুরআনের আলোকে মুশরিক কে বা কারা?-বিশ্লেষণ:
💠 মুশরিক সে-ই, যে আল্লাহর সাথে কোনোভাবে শরীক করে। বিধান কেবল আল্লাহর — তা অমান্য করাই শিরক:
📌একমাত্র আল-কোরআনকেই আল্লাহর নাজিলকৃত এবং অনুসরণযোগ্য পরিপূর্ণ জীবন বিধান হিসেবে গণ্য করা হয় এবং কোরআনের বাইরে অন্য কোনো গ্রন্থ বা ব্যক্তির বাণীকে দ্বীনি আইনের উৎস হিসেবে গ্রহণ করাকে আল্লাহর সার্বভৌমত্বে অংশীদার স্থাপন বা শিরক হিসেবে দেখা হয়- দ্র: আয়াত ৭:৩, ৮৯:১৬, ৬:৩৮, ৬:১১৪, ৪২:২১, ১৮:২৬, ৪৬:৯, ১০:১৫, ৩৯:৩, ৯:৩১, ৬:১৫৯, 📌 সৃষ্টি ও হুকুম কেবল আল্লাহর- ৭:৫৪
📌 আল্লাহর রাসূল সালামুন আলা মুহাম্মদ নিজেই বলেন, "হুকুম কেবল আল্লাহর"-১২:৬৭
📌 আল্লাহর সাথে অন্যকে বিধানদাতা (হুকুমদাতা) মানা = শিরক-১২:৪০
📌 আলেম ও রাহিবদের হালাল-হারাম মানা = শিরক-৯:৩১
📌 আল্লাহ ছাড়া যারা শরীআহ (বিধান) তৈরি করে, তারা শরীক করে-৪২:২১
📌 আর অধিকাংশ মানুষ মুমিন নয়, অধিকাংশ মানুষ ঈমান আনে, কিন্তু শিরকসহ-12:103, ১২:১০৬
❓ তাহলে কি সব মানবীয় আইন মানা শিরক?
🔍 না — যদি সেই আইন আল্লাহর বিধানের বিপরীতে না হয়।
✅ হালাল: যে রাষ্ট্রীয় বা সামাজিক আইন আল্লাহর বিধানের সাথে সাংঘর্ষিক নয় — যেমন ট্রাফিক আইন, কর আইন, প্রশাসনিক বিধান — এগুলো মানা শিরক নয়।
❌ শিরক: যখন কেউ হালালকে হারাম বা হারামকে হালাল মনে করে আল্লাহ ছাড়া অন্যের নির্দেশে, তখনই তা শিরক হয়ে যায়।
📌 সারাংশ:
🛑 বিধান দেওয়ার একচ্ছত্র অধিকার আল্লাহর-6:67
✅ মানুষ আইন বানাতে পারে — কিন্তু তা হতে হবে আল্লাহর বিধানের অধীন ও বিরোধিতা ছাড়া।
তাই এমন মুশরিকদের সাথে বিবাহ মানে হলো আগুনের পথে পা বাড়ানো।
২️⃣ ব্যভিচার ও শিরক দুটোই নিষিদ্ধ — ঈমানের বিপরীত
📖 সূরা আন-নূর ২৪:৩
"ব্যভিচারী পুরুষ ব্যভিচারিণী অথবা মুশরিক নারীরই উপযুক্ত; আর ব্যভিচারিণী নারীর উপযুক্ত ব্যভিচারী অথবা মুশরিক পুরুষ; এটা মুমিনদের জন্য হারাম করা হয়েছে।"
🧩 এখানেও মুশরিকদের প্রসঙ্গ কেন এসেছে?
ব্যভিচার ও শিরক—দুটোই আল্লাহর বিধান অমান্য করার ফল।
➡️ ব্যভিচারী ব্যক্তি নিজের প্রবৃত্তিকে প্রভু বানায় (দেখুন: ২৫:৪৩),
➡️ মুশরিক ব্যক্তি আল্লাহর বাইরে অন্যকে মানে।
🔗 শিরক ও ব্যভিচার — উভয়ই আল্লাহর বিধান অমান্য করার চিহ্ন। এই দুটি কাজের মধ্যে এক গভীর মানসিকতা-সংযোগ রয়েছে: আল্লাহর বিধানের বাইরে চলার প্রবণতা।
🧭 এ আয়াত শিক্ষা দেয়: নৈতিকতা ও ঈমান বিবাহের ভিত্তি হতে হবে, না যে শুধু সৌন্দর্য বা বিত্ত।
📖 বিবাহের বৈধতা ঈমানের উপর নির্ভরশীল: ঈমানই সম্পর্কের মানদণ্ড: ঈমান যাচাইয়ের নির্দেশ:
সুরা মুমতাহিনা (৬০:১০)
“তারা ওদের জন্য হালাল নয় এবং হালাল হবে না ওরা তাদের জন্য।” — একজন মুমিন নারী কাফির পুরুষের স্ত্রী হতে পারে না, এবং এর বিপরীতটাও ঠিক।
"হে যারা ঈমান এনেছ! যখন মুমিন নারীরা তোমাদের কাছে আসে, তখন তোমরা তাদের যাচাই করে নিও…
সুতরাং যদি তোমরা তাদেরকে মুমিনা হিসাবে জানতে পারো, তাহলে তাদেরকে কাফিরদের কাছে ফিরিয়ে দিও না। তারা ওদের জন্য হালাল নয় এবং ওরা তাদের জন্য হালাল নয়…
আর তোমরা কাফিরদের বন্ধন ধরে রেখো না। …
এগুলো আল্লাহর নির্দেশ। তিনি তোমাদের মাঝে মীমাংসা করেন।"
এই আয়াত প্রমাণ করে, শুধু মুখের কথায় “মুসলিম” হওয়া যথেষ্ট নয় — বরং প্রকৃত ঈমান থাকা চাই।
☑️ যাচাইযোগ্য ঈমান ছাড়া বিবাহ বৈধ নয়।
☑️ মুমিন নারীদের কাফিরদের কাছে ফেরত নয় — ঈমানই সম্পর্কের মানদণ্ড
☑️ কাফিরদের সাথে বন্ধন রাখা যাবেনা।
৭️⃣ ইসলামের সীমার বাইরে থাকা মানেই শিরক — বিবাহের আগেই ঈমান আনা ও তা ঘোষণা করা জরুরি
📖সূরা আন-নিসা ৪:১৩৬ 📖সূরা আল-বাকারা ২:41 📖সূরা আল-বাকারা ২:১৩৬ 📖সূরা আলে ইমরান ৩:৮৪ 📖সূরা আল-বাকারা ২:২৮৫ 📖সূরা আলে ইমরান ৩:৫৩
✅ কুরআন অনুসারে, মুসলিমদের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপনের পূর্বশর্ত হলো ঈমান।
✅ ঈমান আনা মানে: কেবল মুখে বলা নয়, বরং আল্লাহ, তাঁর রাসূল এবং কিতাবসমূহে বিশ্বাস করা ও তা ঘোষণার মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করা।
✅ তাই বিবাহের পূর্বে যার ঈমান নেই বা স্পষ্ট ঘোষণা নেই, তাকে ইসলাম গ্রহণ করে মুমিন হতে হবে। অন্যথায় তা কুরআনের বিধান অনুযায়ী শিরক ও হারাম সম্পর্ক বলে গণ্য হবে (২:২২১, ৬০:১০)।
📖 নিকাহের সৌন্দর্য : ভালো মানুষদের জন্য ভালো সঙ্গী — ঈমান ও চরিত্রের মিল
"খারাপ নারীরা খারাপ পুরুষদের জন্য এবং খারাপ পুরুষরা খারাপ নারীদের জন্য। আর ভালো নারীরা ভালো পুরুষদের জন্য এবং ভালো পুরুষরা ভালো নারীদের জন্য। তারা যা বলে (অর্থাৎ বদনাম বা অপবাদ, দ্র: ২৪:৩, ২৪:২৩, 33:58, ১০৪:১, ৮৫:১০) তার থেকে তারা মুক্ত। তাদের জন্য রয়েছে মাগফিরাত (ক্ষমা) ও সম্মানজনক রিযিক"- ২৪:২৬
🎯 চরিত্রে মিল না থাকলে, জীবনে শান্তি আসে না।
🎯 একজন মুমিন সঙ্গী তার দ্বীন, চরিত্র ও আদর্শে মিল রাখে — এটাই সুখী বিবাহের মূলনীতি।
📖 গোপন বিবাহ নিষিদ্ধ — কুরআনের ভাষায়
সির্রান (গোপন সঙ্গিনী) নিষিদ্ধ ঘোষণা
📖 সূরা নিসা ৪:২৫
"...না যেন তারা ব্যভিচারিণী হয়, না যেন গোপন সঙ্গিনী হয় (بِغَيْرِ سِرٍّ)..."
🔍 এখানে স্পষ্টভাবে গোপন সম্পর্ক নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
✦ অধ্যায় ৩: স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক দায়িত্ব ও আচরণ:
📖 সূরা নিসা ৪:১৯
“...তোমরা নারীদের সঙ্গে সুন্দরভাবে বসবাস করো...”
📖 সূরা বাকারা ২:১৮৭
“...তারা তোমাদের জন্য আবরণ, আর তোমরা তাদের জন্য আবরণ...
📖...তোমাদের স্ত্রী ও সন্তানদের কেউ কেউ তোমাদের শত্রু হতে পারে, সুতরাং তাদের সম্পর্কে সতর্ক থাকো...64:4, 2:36, 20:123, 7:24
📌 🕋 দো‘আ:
প্রিয় মুমিন-মুমিনাত, মুসলিম ভাই ও বোনেরা,
বিবাহ কেবল দৈহিক সম্পর্ক নয়, বরং এটি একটি আধ্যাত্মিক ও নৈতিক বন্ধন। ঈমানই সম্পর্কের আসল বন্ধন।
বিবাহ শুধু সামাজিক চুক্তি নয় — এটা এক ইবাদত, এক আখিরাতের প্রস্তুতি।
তাই পাত্র-পাত্রী বাছাইয়ের সময় ‘দ্বীন’ ও ‘ঈমান’ হোক প্রথম বিবেচ্য।
فَإِمْسَاكٌۢ بِمَعْرُوفٍ أَوْ تَسْرِيحٌۢ بِإِحْسَٰنٍۢ
“অথবা তাকে ভালোভাবে রাখা, অথবা তাকে ভালোভাবে বিদায় দেওয়া” -সূরা বাকারা: ২:২২৯
কুরআনের নির্দেশনা হলো:
ঈমান ব্যতীত কোনো স্থায়ী দাম্পত্য সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে না-সূরা মুহাম্মদ ৪৭:১৯
"জেনে রাখো, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ (মান্যকারী) নেই, অতএব তুমি ক্ষমা চাও..."-৩:৫৩
رَبَّنَا آمَنَّا بِمَا أَنزَلْتَ وَٱتَّبَعْنَا ٱلرَّسُولَ فَٱكْتُبْنَا مَعَ ٱلشَّـٰهِدِينَ
"হে আমাদের রব! আমরা ঈমান এনেছি, আপনি যা নাযিল করেছেন, এবং আমরা রাসূলের অনুসরণ করেছি। আমাদেরকে সাক্ষ্যদানকারীদের অন্তর্ভুক্ত করুন।"
🤲 দুআ:
رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَٰجِنَا وَذُرِّيَّٰتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍۢ وَٱجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًۭا
“হে আমাদের রব! আপনি আমাদের দাম্পত্যসাথীদের ও আমাদের প্রজন্মের মধ্য থেকে আমাদের জন্য চক্ষুসমূহ শীতলকারী দান করুন। আর আপনি আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্য ইমাম বানিয়ে দিন”— (সূরা ফুরকান: 25: ৭৪)
খুতবা শেষে কবুলিয়াতের জন্য দুআ হিসেবে আল-কুরআনের আরও কিছু দোআ সংযুক্ত করা যায়, যেগুলো বিশুদ্ধ, আরবি, অর্থবহ এবং নবীদের মুখনিঃসৃত — অর্থাৎ সর্বোত্তম দোআ। নিচে কিছু উপযুক্ত কুরআনি দোআ দেওয়া হলো, যেগুলো খুতবার শেষে সুন্দরভাবে ব্যবহার করা যায়:
🌟 ১. দোআ: আল্লাহ আমাদের কবুল করে নিন
رَبَّنَا تَقَبَّلْ مِنَّا ۖ إِنَّكَ أَنتَ ٱلسَّمِيعُ ٱلْعَلِيمُ ۚ وَ تُبۡ عَلَیۡنَا ۚ اِنَّکَ اَنۡتَ التَّوَّابُ الرَّحِیۡمُ ﴿۱۲۸
হে আমাদের রব! আপনি আমাদের পক্ষ থেকে কবুল করুন। নিশ্চয়ই আপনি, আপনিই সর্বস্পন্দনগ্রাহী, বিস্তৃত জ্ঞানসম্পন্ন। এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন। নিশ্চয়ই আপনি, আপনিই ক্ষমাশীল, দয়ালু। (সূরা আল-বাকারা ২:১২৭-128)
🕊️ ২. ক্ষমা ও দয়া চাওয়া:
رَبَّنَا اغۡفِرۡ لَنَا وَ لِاِخۡوَانِنَا الَّذِیۡنَ سَبَقُوۡنَا بِالۡاِیۡمَانِ وَ لَا تَجۡعَلۡ فِیۡ قُلُوۡبِنَا غِلًّا لِّلَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا رَبَّنَاۤ اِنَّکَ رَءُوۡفٌ رَّحِیۡمٌ ﴿
হে আমাদের রব! আমাদেরকে ও আমাদের ভাইদেরকে ক্ষমা করে দিন, যারা ঈমানের সাথে আমাদের আগে চলে গিয়েছে। আর যারা ঈমান এনেছে, তাদের জন্য আমাদের অন্তরগুলোর মধ্যে কোনো বিদ্বেষ রাখবেন না। হে আমাদের রব! নিশ্চয়ই আপনি স্নেহপরায়ণ দয়ালু। (সূরা আল-হাশর ৫৯:১০)
🌈 ৩. দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ:
رَبَّنَآ ءَاتِنَا فِى ٱلدُّنْيَا حَسَنَةًۭ وَفِى ٱلْـَٔاخِرَةِ حَسَنَةًۭ وَقِنَا عَذَابَ ٱلنَّارِ
হে আমাদের রব! আমাদেরকে দুনিয়ার মধ্যে কল্যাণ ও আখিরাতের মধ্যে কল্যাণ দিন। এবং আমাদেরকে আগুনের শাস্তি থেকে রক্ষা করুন। (সূরা আল-বাকারা ২:২০১)
💫 ৪. পথ প্রদর্শনের দোআ:
رَبَّنَا لَا تُزِغْ قُلُوبَنَا بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنَا وَهَبْ لَنَا مِن لَّدُنكَ رَحْمَةً ۚ إِنَّكَ أَنتَ ٱلْوَهَّابُ“হে আমাদের রব! আপনি আমাদেরকে পথ প্রদর্শনের পর অন্তরগুলোকে টলিয়ে দিয়েন না, এবং আপনার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য রহমত দান করুন। নিশ্চয়ই আপনি মহাদাতা (সূরা আলে ইমরান ৩:৮)
এবং তোমরা মুশরিকদের সাথে বিয়ে দিও না, যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে। অবশ্যই একজন মুমিন দাস একজন মুশরিক পুরুষের চেয়ে উত্তম, যদিও সে তোমাদেরকে মুগ্ধ করে।
তারা আগুনের দিকে ডাকে আর আল্লাহ তাঁর ইচ্ছায় জান্নাত ও ক্ষমার দিকে ডাকেন। এবং তিনি মানুষের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন, যেন তারা উপদেশ গ্রহণ করে"
🛑 বিধান দেওয়ার একচ্ছত্র অধিকার আল্লাহর-6:67
➡️ ব্যভিচারী ব্যক্তি নিজের প্রবৃত্তিকে প্রভু বানায় (দেখুন: ২৫:৪৩),
➡️ মুশরিক ব্যক্তি আল্লাহর বাইরে অন্যকে মানে।
এগুলো আল্লাহর নির্দেশ। তিনি তোমাদের মাঝে মীমাংসা করেন।"
✅ ঈমান আনা মানে: কেবল মুখে বলা নয়, বরং আল্লাহ, তাঁর রাসূল এবং কিতাবসমূহে বিশ্বাস করা ও তা ঘোষণার মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করা।
✅ তাই বিবাহের পূর্বে যার ঈমান নেই বা স্পষ্ট ঘোষণা নেই, তাকে ইসলাম গ্রহণ করে মুমিন হতে হবে। অন্যথায় তা কুরআনের বিধান অনুযায়ী শিরক ও হারাম সম্পর্ক বলে গণ্য হবে (২:২২১, ৬০:১০)।
🎯 একজন মুমিন সঙ্গী তার দ্বীন, চরিত্র ও আদর্শে মিল রাখে — এটাই সুখী বিবাহের মূলনীতি।
“হে আমাদের রব! আপনি আমাদের দাম্পত্যসাথীদের ও আমাদের প্রজন্মের মধ্য থেকে আমাদের জন্য চক্ষুসমূহ শীতলকারী দান করুন। আর আপনি আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্য ইমাম বানিয়ে দিন”— (সূরা ফুরকান: 25: ৭৪)
“বিবাহে পাত্র-পাত্রীর শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পর্কে আল-কুরআন কি বলে?”
আসুন, কুরআনের আলোকে বিষয়টি অনুধাবনের চেষ্টা করি।✅ কুরআনে ‘শিক্ষাগত ডিগ্রি’ নয়, ‘জ্ঞান (علم), বুঝ (تفقه), ও হিকমাহ (حكمة)’ কে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
"… যারা জানে এবং যারা জানে না—তারা কি সমান হতে পারে?"-সূরা আজ-জুমার ৩৯:৯
➡️ পাত্র/পাত্রী যদি কুরআনের জ্ঞান রাখে, হালাল-হারামের ফারাক বোঝে, তাহলে সে বিবাহ ও পরিবার পরিচালনায় সফল হবে, ইনশা'আল্লাহ।
🟢 ২. দ্বীনী বুঝ ও গভীর চিন্তা (تفقه)
"তাদের মধ্য হতে একটি দল কেন না বের হয় যাতে তারা দ্বীনের জ্ঞান অর্জন করে (লিয়াতাফাক্কাহু ফিদ-দীন)..."-সূরা আত-তাওবা ৯:১২২
➡️ অর্থাৎ, পাত্র/পাত্রী "ফিকহ" বা সঠিক দ্বীনী বুঝ রাখে কিনা, সেটি বিবেচ্য। কেবল ডিগ্রি নয়, জীবনে কুরআনের হিকমাহ প্রয়োগ করতে পারে কি না, সেটাই মুখ্য।
🟢 ৩. হিকমাহ ও নৈতিক শিক্ষা
"আল্লাহ যাকে ইচ্ছা হিকমাহ (প্রজ্ঞা) দান করেন, আর যাকে হিকমাহ দান করেন, তাকে অনেক কল্যাণ দান করা হয়"-সূরা আল-বাকারা ২:২৬৯
➡️ বিবাহের জন্য এই হিকমাহ বা প্রজ্ঞা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ—পরিবার পরিচালনা, দ্বীনী পরিবেশ তৈরি এবং সন্তানদের ন্যায় পথে গড়ে তোলার জন্য।
✅ সারসংক্ষেপ:
📌 কুরআন ‘শিক্ষাগত যোগ্যতা’ বলতে শুধু সনদ বা ডিগ্রিকে নির্দেশ করে না, বরং তাওহীদের জ্ঞান, দ্বীনের গভীরতা, কুরআনের হিকমাহ, চরিত্র ও চিন্তাশক্তি—এগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে।
📌 তাই পাত্র/পাত্রী কুরআনের আলোকে শিক্ষিত কি না, জীবনবোধ ও আল্লাহভীতি রাখে কি না—এই বিষয়গুলো বিবাহে প্রকৃত "যোগ্যতা"
📌 পাত্র-পাত্রীর সম্মতি আবশ্যক / পারস্পরিক সম্মতি ও ইচ্ছা:
🟢 "...তোমরা তাদের বিবাহে বাধা দিও না যখন তারা নিজ ইচ্ছায় স্বামী গ্রহণ করতে চায়"-২:২৩২
🔍 নারীর স্বাধীন ইচ্ছার প্রতি স্বীকৃতি। বিবাহে জবরদস্তি নিষিদ্ধ।
🟢 "হে মুমিনগণ! তোমাদের জন্য বৈধ নয় নারীদের জোরপূর্বক উত্তরাধিকার হিসেবে গ্রহণ করা..."-৪:১৯
🔍 নারীর উপর জোর প্রয়োগ করে বিয়ে করা নিষিদ্ধ। সম্মতি অপরিহার্য।
🟢 "...আর তোমাদের মধ্যে যারা বিবাহ করার সামর্থ্য পায় না, তারা যেন পবিত্রতা রক্ষা করে যতক্ষণ না আল্লাহ তাদের নিজ অনুগ্রহে সচ্ছল করেন..."-২৪:৩৩
🔍 বিবাহ একটি ইচ্ছাকৃত ও প্রস্তুতিপূর্ণ সিদ্ধান্ত—জোরপূর্বক নয়।
🟢 "...আমি তোমাকে আমার এই মেয়েকে বিয়ে দিতে চাই, শর্ত এই যে..."-২৮:২৭
🔍 মেয়ের পিতা প্রস্তাব দিচ্ছেন, নির্দেশ দিচ্ছেন না—ইচ্ছা ও আলোচনা প্রক্রিয়াটির স্বীকৃতি।
🔖 অভিভাবকের অনুমতি: সূরা নিসা ৪:২৫, আহযাব ৩৩:৩৭
🔖শশুড়/পিতা/অভিভাবক কেমন হতে পারে! -দ্র: (সূরা আল-কাসাস ২৮:২৭)
🔲 বিবাহের পূর্ব প্রস্তুতির অংশ হিসাবে পাত্র-পাত্রী উপরোক্ত সূত্রের আয়াতসমূহ সহ সূরা ৪:১৩৬, ২:১৩৬, ৩:৮৪, ২:২৮৫, ২:২২১-২৪৫, ৪ নং সূরা আন-নিসা, ২৪ নং সূরা আন-নূর এর বিবাহ সংক্রান্ত আয়াতগুলি বাংলা অর্থসহ স্টাডি করেছেন কিনা?
এই চেকলিস্ট বিয়ের উপযুক্ততা যাচাইয়ের জন্য একটি নৈতিক ও ঈমানভিত্তিক মাপকাঠি। এর মাধ্যমে পাত্র/পাত্রী উভয়ের ঈমানি অবস্থান যাচাই করে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হবে, বিইজনিল্লাহ!
বিবাহ কেবল দেহগত/ শাররিক কাঠামোগত নয়, বরং একটি দ্বীনি ও নৈতিক চুক্তি। তাই পাত্র/পাত্রী নির্বাচনে কুরআনের আলোকে যোগ্যতা যাচাই করা অত্যন্ত জরুরি।
📌 ➡️ দোষ কার? — দোষ আমাদেরই, যখন আমরা কুরআনের পথ উপেক্ষা করে নিজেদের মাপকাঠিতে জীবন সাজাতে চাই।
➡️ কিন্তু উপায়ও আমাদের হাতেই, যদি আমরা আবার কুরআনকে জীবনের কেন্দ্রস্থলে ফিরিয়ে আনি।
দুআ-1
আর যারা বলে, হে আমাদের রব! আপনি আমাদের দাম্পত্যসাথীদের ও আমাদের প্রজন্মের মধ্য থেকে আমাদের জন্য চক্ষুসমূহ শীতলকারী দান করুন। আর আপনি আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্য ইমাম বানিয়ে দিন-25:74
video-1/2
رَبَّنَاۤ اٰتِنَا فِی الدُّنۡیَا حَسَنَۃً وَّ فِی الۡاٰخِرَۃِ حَسَنَۃً وَّ قِنَا عَذَابَ النَّارِ ﴿۲۰۱
Leave a Comment